চিতলমারী (বাগেরহাট) : একদিকে করোনার ক্রান্তিকাল। অন্যদিকে কয়দিনের টানা বৃষ্টিতে নাকাল। টিপটিপ বৃষ্টিতে ভিজে ঘর থেকে বের হয়েছেন সাধন বৈরাগী। যদি দু’চার টাকা আয় হয়। কিন্তু বাজারে আসার পর থেকে সারা দিন বৃষ্টি। একটি টাকাও আয় হয়নি। অথচ রাত পোহালেই এনজিওর কিস্তি। আজ রাতে আর সাধন বৈরাগীর চোখের দুই পাতা এক হবে না।
রোববার বিকেলে বাগেরহাটের চিতলমারী সদর বাজারে ছাতার মেরামতকারী সাধন বৈরাগীর (৪৫) সঙ্গে এসব নিয়েই কথা হয়।
দুঃখ করে তিনি বলেন, স্ত্রী লতিতা বৈরাগী ও দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংবাদ। থাকেন ওয়াপদা পাড়ার বস্তিতে। সংসারের প্রয়োজনে দুটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। প্রতি সোমবার একটি এনজিওর ৮০ হাজার টাকার বিপরীতে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং অন্য এনজিওটির ৬০ হাজার টাকার বিপরীতে ১ হাজার ২০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। কিন্তু করোনার শুরু থেকেই উপার্জনে টান পড়েছে। আর এই কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আয় উপার্জন প্রায় বন্ধ।
কিস্তি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সুরশাইল গ্রামের ভ্যান চালক মো. আকবর আলী (৫৭)। স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে ছয় সদস্যর পরিবার তাঁর ওপর নির্ভরশীল। কিছুদিন আগে বাড়ির সামনে থেকে ভ্যানটি চুরি যায়। আবার ভ্যান কিনতে একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। প্রতি সোমবার কিস্তি। তাই বৃষ্টিতে ভিজেই বাইরে বেরিয়েছেন।
চিতলমারী বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, শুধু সাধন বৈরাগী, সনে সরকার, মো. আকবর আলী ও মাসুদ মোল্লা নন, এ উপজেলার নিম্নআয়ের কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন এনজিওর ঋণের জালে আবদ্ধ।