হোম > বিশ্লেষণ

নতুন বছরে নয়া বিশ্বব্যবস্থার রূপরেখা দেবেন ট্রাম্প–পুতিন

২০১৯ সালে জি–২০ সামিটে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পুতিন। ছবি: এএফপি

নতুন বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনাও এখন তুঙ্গে। ধারণা করা হচ্ছে, ‘জিওলজিক্যাল আলফা মেল’ হিসেবে পরিচিত এ দুই নেতা ভবিষ্যতের বিশ্বব্যবস্থা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবেন। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে এমন একটি সম্ভাবনার ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন সংকট সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর এই ঘোষণা তাঁকে মার্কিন ভোটারদের কাছে একজন চৌকস কূটনীতিক হিসেবে তুলে ধরেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাঁর এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পথ সহজ নয়।

অন্যদিকে পুতিন শুধু ইউক্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল করা নয় বরং ন্যাটোর ভূমিকা সীমিত করা এবং রাশিয়াকে একটি বৈশ্বিক ক্ষমতার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। যুদ্ধ বন্ধের জন্য তাঁর শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনকে চিরতরে ন্যাটোর বাইরে রাখা এবং দখলকৃত ভূখণ্ড রাশিয়া হাতেই ছেড়ে দেওয়া।

পুতিন ও ট্রাম্প উভয়েই একধরনের ‘আদর্শহীন বাস্তবতাবাদী’ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। পুতিন মানবাধিকার ও পশ্চিমা উদারনৈতিক মূল্যবোধকে প্রত্যাখ্যান করেন। ট্রাম্পও প্রায় একই ধাঁচে আদর্শের চেয়ে ক্ষমতার গতিপ্রকৃতির বাস্তবতাকে বেশি প্রাধান্য দেন। পুতিন ট্রাম্পের এই বৈশিষ্ট্যকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন, যেখানে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থার গঠন সম্ভব হতে পারে।

ইউক্রেন সংকট সমাধান যে সহজ হবে না, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। রাশিয়া চায় আলোচনাগুলো এমনভাবে পরিচালিত হোক, যাতে কেবল ইউক্রেন নয়, পুরো ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্গঠিত হয়। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পুতিন এই আলোচনাকে দীর্ঘায়িত করবেন এবং একটি বড় নিরাপত্তা চুক্তির দিকে যেতে চাইবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আর্থিক চাপের মুখে পড়েছে কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের সামরিক অবস্থান এখনো শক্তিশালী। পুতিন বিশ্বাস করেন, ইউক্রেন এবং পশ্চিমা দেশগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা বেশি দিন জিইয়ে রাখতে পারবে না।

এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চীন–রাশিয়া জোটকে দুর্বল করার পরিকল্পনা করছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিকল্পনা সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ রাশিয়া এবং চীনের বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং উভয়ের আমেরিকা–বিরোধী মনোভাব এই ধরনের উদ্যোগে বড় বাধা।

ভ্লাদিমির পুতিন একাধিকবার বলেছেন, একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে, যেখানে পুরোনো নীতি ভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা আর থাকবে না। এর পরিবর্তে, শক্তিশালী দেশগুলো নিজেদের ক্ষমতাবলে নতুন নিয়ম তৈরি করবে। তিনি মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ এই নতুন ব্যবস্থার সূচনা করেছে।

পুতিন বলেছেন, ‘মুক্ত বিশ্বের’ ধারণাটি একটি ‘পুরোনো সংস্কার’, যা রাশিয়া এবং চীনের মতো দেশগুলোর শক্তি–সামর্থ্যকে ছোট করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। তিনি এই নতুন ব্যবস্থায় মানবাধিকার এবং আদর্শের চেয়ে ক্ষমতার বাস্তবতাকে অগ্রাধিকার দিতে চান।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুতিন এবং ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠক বিশ্ব রাজনীতিতে একটি বড় মোড় আনতে পারে। তবে এটি ন্যাটো এবং ইউক্রেনের জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। আবার ইউক্রেন যদি আলোচনায় বেশি ছাড় দেয়, তবে তা দেশটির সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর হবে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, যদি ট্রাম্প ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে পুতিনের সঙ্গে চুক্তি করেন, তবে এটি পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে ফাটল তৈরি করতে পারে।

চীন চাইলে এক দিনেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে, কিন্তু কীভাবে

‘ডেথ সেলে’ ইমরান খান—ক্রিকেট বিশ্বের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইরান ও ইসরায়েলে সমানতালে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি

পাকিস্তানকে এফ-১৬ আধুনিকীকরণের প্যাকেজ, ভারতকে কী বার্তা দিতে চান ট্রাম্প

ডার্ক ফ্লিট: নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেভাবে চলে ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল পাচার

এআই চাকরি কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকায়, কিন্তু নিয়োগ বাড়াচ্ছে ভারতে—কীভাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ না সম্ভাবনা

শত বছর আগে জাপানের কাছে হারের বদলা চান সি চিন পিং!

কোন দেশে সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য সর্বাধিক, বাংলাদেশের চিত্র কেমন

যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা দক্ষ ইতালির জঙ্গি বিমান ইউরোফাইটার টাইফুন