সাক্ষাৎকার

টেস্টে ৩৫০ উইকেট নিতে চাই

ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো করা নাঈম হাসানের টেস্টে শুরুটা হয়েছিল দারুণ। তবে সাত বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিয়মিত টেস্ট খেলা হয়নি তাঁর। বিদেশে সুযোগ পান সদ্য সমাপ্ত শ্রীলঙ্কা সফরে। সেখানে ভালো করা নাঈমের লক্ষ্য আরও বড় কিছু। বোলিংয়ে পরিবর্তন, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে ২৬ বছর বয়সী অফ স্পিনার কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহমেদ রিয়াদ

প্রশ্ন: টেস্টে আপনার সব উইকেট দেশের মাঠে। গল টেস্টে প্রথমবারের মতো বিদেশে ৫ উইকেট পেলেন। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?

নাঈম হাসান: যত টেস্ট খেলেছি, সবই দেশের মাটিতে। যেহেতু টেস্ট খেলি, সব জায়গায় পারফর্ম করার ইচ্ছা থাকে। এবার যখন বিদেশে খেলার সুযোগ পেলাম, নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সব সময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। হ্যাঁ, পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। তবে এখানে থেমে থাকতে চাই না, সামনে আরও ভালো করতে চাই; আরও ম্যাচ খেলতে চাই।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে সাধারণত একাধিক অফ স্পিনার খেলানো হয় না। এবার মিরাজের অনুপস্থিতিতে আপনি সুযোগ পেয়েছেন এবং দ্বিতীয় টেস্টে খেলেছেন মিরাজের ফেরার পর। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

নাঈম: কখনো ভাবিনি যে কারও বদলি হিসেবে খেলছি। আমাকে দলে রাখা হয়েছে পারফর্ম করার জন্য। আমি সেই চেষ্টা করেছি। তাইজুল ভাই সিনিয়র, তিনি দারুণভাবে আমাকে গাইড করেছেন। সব সময় পাশে থেকেছেন।

প্রশ্ন: এখন টেস্টে একজন নির্ভরযোগ্য স্পিনার হিসেবে খেলছেন। সাদা বলে কখনো জাতীয় দলে খেলা হয়নি। তিন সংস্করণে খেলতে কীভাবে এগোচ্ছেন?

নাঈম: সাদা বলেও আমি দলের সঙ্গে ছিলাম, পাঁচ-ছয়টা সিরিজে স্কোয়াডে থেকেছি, যদিও অভিষেক হয়নি। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সাদা বলে ম্যাচ খেলেছি; সেখানে পারফর্মও করেছি। যদি সুযোগ পাই এবং নিয়মিত খেলার পরিবেশ থাকে, ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারব। তখন যদি দল মনে করে যে আমার প্রয়োজন, নিশ্চয়ই সুযোগ আসবে। এমন নয় যে সাদা বলে খেলতে পারি না। আমরা প্রিমিয়ার লিগ খেলি, বিপিএল খেলি, সবখানে চেষ্টা করি ভালো করার। সব সময় প্রস্তুত থাকি, যেখানে সুযোগ পাব, সেখানে যেন নিজেকে প্রমাণ করতে পারি। তখন স্বাভাবিকভাবে নজরে আসা সম্ভব।

প্রশ্ন: আপনার বোলিং অ্যাকশনে, বিশেষ করে রিলিজ পয়েন্টে কিছু পরিবর্তন এসেছে বলে মনে হয়।

নাঈম: অ্যাকশনে বড় কোনো পরিবর্তন করিনি। তবে মুশতাক ভাইয়ের সঙ্গে সময় কাটিয়ে কিছু সূক্ষ্ম টেকনিক্যাল দিক বুঝেছি। বিশেষ করে রিলিজ পয়েন্টে বল কোথায় ফেললে বেশি টার্ন পাওয়া যাবে, কীভাবে ব্যাটারকে বিপাকে ফেলা যায়, এসব বিষয়ে তিনি পরিষ্কার করে বোঝান। আমি মন দিয়ে শুনেছি, অনুশীলন করেছি এবং এর সুফলও পেয়েছি। যেহেতু আমি তুলনামূলক লম্বা, সেটা বাড়তি অ্যাডভান্টেজ হিসেবে কাজ করেছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দল একটা রূপান্তরকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে দল গড়তে কত সময় লাগতে পারে?

নাঈম: খেলাটা এমনই, এখানে কেউ সারা জীবন খেলতে পারে না। আমি খেলছি, আমাকেও একদিন বিদায় নিতে হবে। তবে যেকোনো দল গড়তে সময় লাগে। কিছুদিন আগেও শ্রীলঙ্কা খুব খারাপ সময় পার করেছে। কিন্তু তারা তাদের দলকে সময় দিয়েছে, এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ক্রিকেট এমনই, সময় দিলে সব বদলাবে। আমাদেরও ধৈর্য ধরতে হবে।

প্রশ্ন: একজন টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে আপনার লক্ষ্য কী?

নাঈম: সবারই ইচ্ছা থাকে বিশ্বমানের খেলোয়াড় হওয়ার; কিন্তু সেটা এক দিনে সম্ভব নয়। আমাকে ধাপে ধাপে এগোতে হবে। আমার লক্ষ্য খুব পরিষ্কার, দলের প্রয়োজন মেটানো, ম্যাচ জেতানো। হ্যাঁ,৩০০-৫০০ উইকেটের স্বপ্ন দেখতেই পারি, কিন্তু সেটা মাথায় নিলে অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় চাপ তৈরি হয়। তখন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় আমরা ভাবি, এই ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে হবে। কিন্তু এমন ভাবনা সব সময় কাজে আসে না। আমি বিশ্বাস করি, ধারাবাহিকভাবে কাজ করলে, সঠিক প্রক্রিয়া মেনে চললে সাফল্য আসবেই। ইচ্ছা আছে টেস্টে অন্তত ৩৫০ উইকেট নেওয়ার।

প্রশ্ন: জাতীয় দলের বাইরে থাকার সময় কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? তখন কীভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন?

নাঈম: পুরো সময় আল্লাহর ওপর ভরসা করে কাটিয়েছি। আমার দৈনন্দিন রুটিন ছিল সকালে ঘুম থেকে ওঠা, নামাজ পড়ে মাঠে যাওয়া, নিয়মিত অনুশীলন ও জিম, তারপর সন্ধ্যায় বাসায় ফেরা। রাত ৯টার মধ্যে ঘুমিয়ে যেতাম। খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর দিয়েছি। আমার স্ত্রী আমাকে দারুণভাবে সাপোর্ট করেছে, বিশেষ করে ডায়েট মেনে চলতে অনেক সহযোগিতা করেছে। এখনো সেই রুটিন মেনে চলছি। যদিও এখন সন্তান আছে। আমরা দুজনেই পরিবার সামলাই।

‘একটু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছিল, ঠিক হয়ে গেছে’

আমাকে হকির হামজা ডাকলে গর্বিত হই

সামনে আরও অনেক কিছু আসছে: ভারতকে হারানোর নায়ক মোরসালিন

আমার কি স্ত্রী-মেয়ে-বোন নেই, জাহানারার অভিযোগ নিয়ে মঞ্জু

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

‘এক বছরে ক্রীড়াঙ্গনে খুব বেশি পরিবর্তন চোখে পড়েনি’

‘সাইকেলটা নিয়ে মারামারি হচ্ছে!’

ওয়াসিম আকরামের কাছে বাংলাদেশের মানুষ, খাবার—সবই দারুণ

বাংলাদেশে প্রবাসী ফুটবলার আরও বেশি আসা উচিত

ক্রিকেটের চেয়ে নির্বাচনে বেশি আগ্রহ কেন