ব্রাজিলিয়ান লিগে ফোর্তালেজার বিপক্ষে গত শনিবার ম্যাচ খেললেন নেইমার। তারপরও ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ কার্লো আনচেলত্তির চোখে এখনো ফিট নন নেইমার। আর তাই তাঁকে ছাড়াই এ মাসেই হতে যাওয়া সেনেগাল ও তিউনিসিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের ব্রাজিল দলে জায়গা হলো না নেইমারের। ১৫ নভেম্বর লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে সেনেগাল ও ১৮ নভেম্বর ফ্রান্সের লিলে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে খেলবে কার্লো আনচেলত্তির দল।
কেন নেইমারকে নেওয়া হলো না দলে? দল ঘোষণার সময় ব্রাজিল জাতীয় দলের ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তি বললেন, ‘আমি নেইমারের সঙ্গে আবার কথা বলেছি। দেখা যাক, চোট থেকে কবে ফিরতে পারে। পুরো বিশ্বকাপ খেলতে হলে খেলোয়াড়ের উচ্চমাত্রার শারীরিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি। কেউ যদি পুরোপুরি ফিট না থাকে, আমি তাকে দলে নেব না।’
নেইমারের জন্য কোচের বার্তাটা পরিষ্কার। দু-এক ম্যাচ খেলে চোটে পড়া, চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরে আবার চোটে মাঠের বাইরে চলে যাওয়া—এমন কাউকে তিনি বিশ্বকাপের দলে রাখবেন না। ব্রাজিল সবশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০০২ সালে। দীর্ঘ ২৩ বছরের শিরোপা বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে এবার রিয়ালের সাবেক কোচ আনচেলত্তিকে নিয়োগ দিয়েছে তারা। বিদেশি কোনো কোচ নিয়ে কেউ কখনো বিশ্বকাপ জেতেনি—এই সত্যটা জানার পরও ইতালিয়ান আনচেলত্তিকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) এই বিশ্বাসে নিয়োগ দিয়েছে—ব্রাজিলকে তিনি বিশ্বকাপ জিতিয়ে দেবেন। ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে সিবিএফের চাওয়াটাকে তিনিও এখন বুকে ধারণ করেন। তাই বিশ্বকাপের সেরা দল বাছাইয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন আনচেলত্তি, ‘আমাদের দলে এমন খেলোয়াড় দরকার, যারা শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ ফিট।’
নেইমারের জায়গা না হলেও দুটি প্রীতি ম্যাচের ব্রাজিল দলে নতুন মুখ হিসেবে ডাক পেয়েছেন লুচানো জোবা। তিন বছর পর ফিরেছেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ফাবিনিও। ডাকা হয়েছে তরুণ ফরোয়ার্ড ভিতো রোকেকেও। তাঁদের নিয়ে আনচেলত্তি বললেন, ‘দলে ফাবিনিওর মতো খেলোয়াড় আছে। লুচানো জোবা, যাকে আমি মাঠে দেখতে চাই, ভালো একটি মৌসুম কাটানো ভিতো রোকে আছে। দলে আছে ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলে খেলা সাতজন খেলোয়াড়ও।’
নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া কিংবা পুরোনোদের ফিরিয়ে আনার পেছনে আনচেলত্তির যুক্তি, ‘আমি এই ম্যাচগুলোয় নতুন কিছু খেলোয়াড়কে পর্যবেক্ষণ করতে চাই। ফাবিনিও, লুচানো জোবা, ভিতো রোকে। ওরা সবাই দারুণ মৌসুম কাটাচ্ছে। এবার আমাদের দলে ব্রাসিলেইরাও থেকে সাতজন খেলোয়াড় আছে, যা লিগটির মানের প্রমাণ। এই দুই ম্যাচে আমরা জাতীয় দলের জন্য আরও স্থিতিশীল একটি ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই।’
তবে মার্চের মধ্যেই বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন আনচেলত্তি, ‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমি যত বেশি সময় কাটাব, চূড়ান্ত দল তৈরির তত কাছাকাছি পৌঁছাব। জুনের দল গঠনের কাছাকাছি আছি আমরা। এরই মধ্যে ১৭ বা ১৮ জন খেলোয়াড় চূড়ান্ত হয়েছে। চোটের ওপরও এটা নির্ভর করবে। তবে দল প্রায় চূড়ান্তই। মার্চের দল হবে চূড়ান্ত দলের খুব কাছাকাছি।’
তাই বিশ্বকাপ খেলতে চাইলে মার্চের মধ্যেই নিজের ফিটনেসের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে নেইমারকে। আনচেলত্তির চাওয়া, বিশ্বকাপ দলের ২৬ খেলোয়াড়কে নিয়েই তিনি টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি শুরু করবেন, ‘যেদিন আমরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করব, সেদিন আমাদের ২৬ জন খেলোয়াড় থাকবে। এর বাইরে কাউকে আমি ডাকব না।’