রিয়াল মাদ্রিদ এই মুহূর্তে উজ্জীবিত এক দল। এই মৌসুমের ১৪ ম্যাচের ১৩টিতেই জয় তাদের। যাঁর কোচিংয়ে এই বদলে যাওয়া ব্লাঙ্কোসদের, সেই জাভি আলোনসোকে ডাগআউটে রেখে অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলবে রিয়াল। লিভারপুলের মাঠ এই অ্যানফিল্ড আবার জাভি আলোনসোর পুরোনো ঘরও।
২০০৯ থেকে ২০১৪—এই পাঁচ বছর খেলোয়াড় হিসেবে রিয়ালে কাটানোর আগের পাঁচ বছর লিভারপুলেই ছিলেন আলোনসো। খেলেছেন ১৪৩ ম্যাচ, গোলও আছে ১৫টি। পুরোনো ঘরে আজ আলোনসো ভিন্ন দলের কোচ হিসেবে গেলেও লিভারপুলের কাছে এই ম্যাচে তাঁর পরিচিতি শত্রু শিবিরের লোক!
তবে এমন সময়ে দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে, যখন দুই দলের পারফরম্যান্স পুরোপুরি বিপরীতমুখী। একের পর এক জিতেই চলেছে রিয়াল। ঠিক উল্টো অবস্থান আর্নে স্লটের দলের। শেষ আট ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে লিভারপুল। দিন কয়েক আগে ঘরের মাঠে শেষ ষোলোয় ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে লিগ কাপ থেকেও।
এই অবস্থায় ঘরের মাঠে খেললেও রিয়াল মাদ্রিদকে আটকানোটা লিভারপুলের জন্য খুবই কঠিন। ডিফেন্স জমাট ছিল না বলে আগের মৌসুমে ভূরি ভূরি গোল হজম করেছে রিয়াল। আলোনসো দায়িত্ব নিয়ে সেই ভঙ্গুর রক্ষণ সারিয়ে তুলেছেন। উর্বর মস্তিষ্কের খেলোয়াড় ছিলেন আলোনসো, এটা সবারই জানা। লিভারপুলের আরও বেশি জানা, কেননা ২০০৫ সালে ইস্তাম্বুলে অলরেডদের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে ছিল তাঁর বড় ভূমিকা। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে এসেই উর্বর মস্তিষ্কের ব্যবহার করছেন আলোনসো। তাতে রিয়াল আরও শাণিত, তাদের রক্ষণ আরও দৃঢ়। স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা লিখেছে—‘আলোনসোর রিয়াল এখন প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখে, শ্বাস নিতে দেয় না।’
আলোনসোর সান্নিধ্যে এমবাপ্পে, বেলিংহাম, ভিনিসিয়ুস—সবাই যেন খুঁজে পেয়েছেন নতুন জীবন। বেলিংহাম বার্সেলোনা, জুভেন্তাস ও ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে টানা গোল করে প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি আলোনসোর পরিকল্পনার কেন্দ্রে। এমবাপ্পে যোগ করেছেন নতুন মাত্রা, নিজের খেলার সঙ্গে প্রেসিং যোগ করে হয়েছেন আরও ভয়ংকর। আর তরুণ আরদা গুলারকে গড়ে তোলা হচ্ছে ভবিষ্যতের ক্রুস-মদরিচের উত্তরসূরি হিসেবে। ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে ক্ষণিকের বিরোধও আলোনসো সামলে নিয়েছেন শান্তভাবে, অভিজ্ঞ নেতার মতো।
তাই পুরোনো ঘরে ফিরলেও পেশাদার কোচ হিসেবে আলোনসোর লক্ষ্য একটাই—অ্যানফিল্ডে জিতে সবাইকে এই বার্তাই দেওয়া রিয়াল আবারও ইউরোপ শাসন করতে প্রস্তুত।