স্কোয়াড নিয়ে যেন লুকোচুরি খেলছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ক্যাম্প শুরুর দুদিন গড়িয়ে গেলেও ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপের বাছাই ও এর আগে নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের স্কোয়াডে কারা আছেন, তা এখনো জানায়নি বাফুফে। এমনকি বর্তমানে ক্যাম্পে থাকা ১৪ জনও জানেন না তাঁদের সতীর্থ হিসেবে আর কারা থাকছেন।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে তাদের মাটিতে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ। যদিও সেই ম্যাচে জেতার একের পর এক লোভনীয় সুযোগ এলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি ফুটবলাররা। জিতলে হয়তো দুই ম্যাচ হাতে থাকতেই ছিটক পড়তে হতো না মূলপর্বে যাওয়ার লড়াই থেকে।
৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান এখন তিনে। সমান পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে ভারত। মাঠ ও মাঠের বাইরের ফুটবলে প্রতিবেশী দেশের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। ভক্তদের পুনরুজ্জীবিত করতে বাংলাদেশকে হারাতে তাই আরও মরিয়া হয়ে আছেন কোচ খালিদ জামিল।
র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের (১৩৬) চেয়ে বাংলাদেশ (১৮৩) ৪৭ ধাপ পিছিয়ে থাকলেও শক্তিমত্তার বিচারে হয়তো এগিয়ে থাকবে। সেটা হামজা চৌধুরী-শমিত শোমরা থাকায়। মার্চে হামজার অভিষেক হলেও শমিতের খেলা হয়নি। এই জুটি সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচেও নিজেদের মেলে ধরেছে দারুণভাবে। দলের যে ওজন, তাতে ১৮ নভেম্বর ভারতের কাছে হারাটা বেমানান হবে কি না বাংলাদেশের জন্য—এমন প্রশ্নে সাংবাদিকদের আজ শেখ মোরসালিন বলেন, ‘অবশ্যই। আমাদের দল এখন ভালো। অবশ্যই আমাদের জিততে হবে। এর বিকল্প আমরা কিছু দেখছি না।’
জেতার বিকল্প নেই—কথাটি ভাঙা রেকর্ডারের মতোই শোনাবে। প্রতি ম্যাচ সামনে রেখে বাংলাদেশের ফুটবলারদের কাছ থেকে এটাই ভেসে আসে বারবার। কিন্তু দিনশেষে মাঠ ছাড়তে হয় হতাশা নিয়ে। মোরসালিনও তা উপলব্ধি করতে পারছেন, ‘বিগত কিছু ম্যাচে আমরা গোল হজম করেছি মানে শেষ দিকে গিয়ে। আমরা ভালোই করেছি, কিন্তু হয় কী, যখন শেষ হওয়ার এক-দুই মিনিট থাকে, ওই সময়ে আমরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছি। এই ব্যাপারগুলো আমরা যদি আরেকটু সচেতন হয়ে খেলতে পারি, আমার মনে হয়, আরও ভালো হবে।’
আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে জাতীয় দলের অনুশীলন। লক্ষ্য একটাই—নেপাল ম্যাচে প্রস্তুত হয়ে ভারতকে হারানো। এমন পরিষ্কার বার্তাই দিয়েছেন কাবরেরা। তাঁর অনুপস্থিতিতে দায়িত্বে থাকা হাসান আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোচ ৩-৪ নভেম্বর চলে আসবেন। কোচিং স্টাফ সবাই জানি যে প্রতিদিন আমাদের কী প্রোগ্রাম। এমনকি সে স্পেন থেকে কিন্তু আমাদের এই প্রোগ্রামটা পর্যবেক্ষণ করছে।’
ভারতের ম্যাচটি কেবল নিয়মরক্ষার হলেও বাংলাদেশ তা কষ্ট লাঘবের লক্ষ্য হিসেবে দেখছে। দলের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রহমত মিয়া বলেন, ‘শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারব না, এখানে একটা কষ্ট তো থাকবে। এবার এশিয়ান কাপে আমাদের টিম ভালো করছে। সামনে আরও ভালো করার সম্ভাবনা আছে। এবার যে আমরা কোয়ালিফাই করতে পারিনি, সবার ভেতর সেই কষ্টটা আছে এবং পরে ইনশা আল্লাহ সবাই আরও ভালো করার চেষ্টা করবে।’
চেষ্টার সঙ্গে প্রাপ্তির মেলবন্ধন ঘটাতে পারবেন তো রহমত-মোরসালিনরা!