বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির (বিএসপিএ) নতুন কার্যালয়ে আজ বসেছিল তারার মেলা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সহসভাপতি ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়ালসহ এসেছেন আরও অনেকেই। অনুষ্ঠানে এসে যখন তিনি কথা বলা শুরু করেছেন, বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন তিনি।
পল্টনে বিএসপিএ-এর নতুন কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন বুলবুল। বিসিবি সভাপতি কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিরোমন্থন করা শুরু করলেন। আজ বিএসপিএ-এর অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আজ যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তার আগে বিএসপিএকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের ডেকে সম্মানিত করার জন্য। যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, যখন আমি স্কুলে পড়তাম, তখন হেঁটে হেঁটে এই রাস্তা দিয়ে প্রত্যেক দিন যেতাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কোনো স্কুল ক্যাম্পে যোগ দিতে। যাওয়ার পথে প্রথমে পড়ত ক্রীড়া লেখক সমিতির অফিসটা। তারপরে ছিল ক্রিকেট বোর্ডের অফিস।’
বিএসপিএ-এর অনুষ্ঠানে আজ কথা বলতে গিয়ে বুলবুল উল্লেখ করেছেন ৩৩ বছরের এক পুরোনো ঘটনা। যে প্রতিষ্ঠান তাঁকে সেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেটা তাঁর ক্যারিয়ারের উন্নয়নে অনেক বড় অবদান রেখেছিল বলে মনে করেন তিনি। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘বিএসপিএ’ই হচ্ছে আমাদের ক্রীড়া লেখক সমিতি। যে ক্রীড়া লেখক সমিতি ১৯৯২ সালে প্রথম আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমি একজন ভালো ক্রিকেটার। ক্রিকেটার হিসেবে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ হয়েছিলাম তার পরে। বিএসপিএ বা তৎকালীন বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে ও যেভাবে ক্রীড়াঙ্গনকে পুরস্কৃত করা শুরু করেছিলেন তাঁরা, সেটা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে সহায়তা করেছে।
বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলামকে নিয়েও বুলবুল আজ স্মৃতিচারণা করেছেন। বিএসপিএ-এর নতুন কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘একটু নস্টালজিক হয়ে যাই, যখন আসলাম ভাইকে দেখছিলাম। দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। সত্যি বলতে আমার আর আসলাম ভাইয়ের ফুটবলের জন্ম হয়েছিল এ জায়গা থেকেই। এই জায়গায় ছিল ফুটবল ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব। আসলাম ভাই অনেক বড় ফুটবলার ছিলেন আর আমি একই ক্লাবে ছিলাম। এখানেই ফুটবল ক্লাব ছিল। মতবিনিময় করছিলাম আমরা।’
পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সে আজ যে বিএসপিএ-এর নতুন কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়েছে, সেটা এক সময় বিসিবির পুরোনো অফিস ছিল। অনুষ্ঠানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদেরকে নতুন এই অফিস দেখেশুনে রাখতে বলেছেন বুলবুল, ‘আজ আবারও বলছি যে আমাদের অফিসটা হয়তো আপনারা ব্যবহার করছেন। যেটা আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের আগের অফিস ছিল। আমাদের ক্রিকেটের জন্ম হয়েছিল এখানে। সেই ক্রিকেট বোর্ড এখন টেস্ট খেলছে। ক্রিকেট ও খেলাধুলার মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের এই মুহূর্তে অনেক পরিচিতি। আমাদের অফিসটা লিজ দিলাম আপনাদের কাছে। দেখে রাখবেন। মাঝেমধ্যে আসার সুযোগ করে দিয়েন। এখানে এসে স্মৃতি রোমন্থন করব।’
বিসিবির সাবেক অফিসের কথা বলতে গিয়ে বুলবুল আজ পুরোনো এক ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘শাকিল ভাই একটা গল্প করতেন সব সময়। এমসিসির কর্মকর্তারা এসেছিলেন ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সভা করতে। সেখানে ছিলেন শাকিল ভাই। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আশরাফুল ভাই-রোজ ভাইয়েরা। সভা সাড়ে ৯টার সময় শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইংল্যান্ডের লোকেরা এসেছিলেন ৯টার সময়। এসে তাঁরা এতটাই জীর্ণ অবস্থা দেখেন যে একটা কক্ষকে ভাগ করে দুইটা কক্ষ করা হয়েছিল। জয়নাল আর আনোয়ার সেখানে ঘুমাচ্ছিল। তাদের তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠিয়ে শাকিল ভাই সভার ব্যবস্থা করেছিলেন।’