ভেন্যু, চিত্রনাট্য একই। ফলটাও একই রকম হয়ে গিয়েছিল প্রায়। কিন্তু ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে জিতলেও গত রাতে বাংলাদেশ ‘এ’ দল হার মেনেছে পাকিস্তান ‘এ’ দলের কাছে। কাতারের দোহায় ওয়েস্ট এন্ড পার্ক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আকবর আলীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের শেষটা হলো স্বপ্নভঙ্গের বেদনায়।
টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া পাকিস্তান ‘এ’ দল পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায়। সেই রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ১৪ বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ ‘এ’। কিন্তু ভাঙনের শুরু এখানেই। বিনা উইকেটে ২২ রান থেকে মুহূর্তেই ৭ উইকেটে ৫৩ রানে পরিণত হয় আকবরের দল। প্রথম সাত ব্যাটারের মধ্যে হাবিবুর রহমান সোহান ও ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। সোহান করেছেন ১৭ বলে ২৬ রান। ১০ বলে ৮ রান করেছেন ইয়াসির। এই ৭ উইকেট পাকিস্তানের স্পিনাররা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে সুফিয়ান মুকিয়াম ৪ ওভারে ১১ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। আরাফাত মিনহাস পেয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাদ মাসুদ ও মাজ সাদাকাত।
৫৩ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৫ রানে থেমে যায়। সুপার ওভারে এরপর বাংলাদেশের ৭ রানের লক্ষ্য পাকিস্তান ২ বল হাতে রেখে তাড়া করে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সহজ লক্ষ্য পেয়েও শিরোপা খোয়ানোর বেদনায় এখন পুড়ছেন আকবর। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘বিশ্বাস ছিল আমাদের। কিন্তু শট নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিইনি। আমরা শুধু নিজেদেরই দুষতে পারি। জানতাম এ ধরনের উইকেটে স্পিনারদের বিপক্ষে খেলা সহজ না। কারণ, যখন আমরা বোলিং করছিলাম, তখন তাদের রান করতে কষ্ট হচ্ছিল। স্পিনারদের দাপট ছিল এখানে এবং দুর্ভাগ্যবশত হেরে গেছি।’
অষ্টম উইকেটে রাকিবুল হাসান ও এস এম মেহেরবের ৩৭ রানের জুটিতে আশা তৈরি হয় বাংলাদেশের। কিন্তু দ্রুত ২ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ১৭.২ ওভারে ৯৬ রানে ৯ উইকেটে পরিণত হয় বাংলাদেশ। হাতে ১ উইকেটে শেষ ২ ওভারে যখন ২৭ রান দরকার, সে সময় ২০ রান নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই টেলএন্ডার ব্যাটার আবদুল গাফফার সাকলাইন ও রিপন মন্ডল। সেই ওভারে সাকলাইন ২ ছক্কা ও রিপন মেরেছেন ১ ছক্কা। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচটি হেরে যাওয়ায় দোহায় গ্যালারিতে বাংলাদেশি দর্শকদের হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। যেখানে ম্যাচের পুরোটা সময় জুড়ে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে তাঁরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
প্রবাসী ভক্ত-সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে আকবরের কণ্ঠে বারবার ফুটে উঠেছে ম্যাচ হারের হতাশা। রানার্সআপ বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন,‘এক পর্যায়ে আমরা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু রাকিবুল-সাকলাইন দৃঢ়তা দেখিয়েছে। ছেলেরা সব মিলিয়ে যা খেলেছে, তাতে ভীষণ গর্বিত। বাংলাদেশি দর্শকেরা অনেক সমর্থন দিয়েছেন। তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’
পাকিস্তান শাহিনস গতকাল সুপার ওভারে জিতে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ তিনবার শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়ে। যার মধ্যে দুইবার তারা জিতেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৯ সালে মিরপুরে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা ‘এ’। একবার করে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে ভারত ‘এ’ ও আফগানিস্তান ‘এ’।