লঙ্কান বোলারদের তোপে বড় পুঁজি আফগানদের জন্য কঠিনই ছিল। কিন্তু ওস্তাদের মার যে হয় শেষ রাতে। ওস্তাদের ভূমিকাটা বেশ সাদরেই নিলেন মোহাম্মদ নবি। দুনিথ ভেল্লালাগের শেষ ওভারে ৫ ছক্কা মেরে শ্রীলঙ্কাকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুড়ে দেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। একটা পর্যায়ে দেড় শ পেরোনো মুশকিল মনে হচ্ছিল আফগানিস্তানের। অথচ ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৯ রান।
সমীকরণ অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কা জিতলেই বাংলাদেশ উঠে যাবে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে। শ্রীলঙ্কা হেরে গেলেও সুযোগ আছে। সে জন্য আফগানিস্তানের জিততে হবে ৬৯ রানে। অর্থাৎ ১০১ রান করে হারলেও সুপার ফোরে খেলবে শ্রীলঙ্কা।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ছিল দারুণ। ২ ওভারে ২৬ রান তুলে নেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সেদিকউল্লাহ আতাল। এতে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত হয়ে পড়েন অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কা। কিন্তু তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই পাল্টা আঘাত হানেন নুয়ান থুশারা। তাঁর স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে স্লিপে থাকা কুশল পেরেরার হাতে ক্যাচ দেন গুরবাজ (১৪)।
ওভারের শেষ বলে করিম জানাতকে (১) ফেরান থুশারা। নিজের পরের ওভারে দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে আতালের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন এই পেসার। ফলে ২৬ রানে কোনো উইকেট না হারানো অবস্থা থেকে আফগানিস্তান মুহূর্তেই নেমে আসে ৪০/৩-এ।
ইব্রাহিম জাদরান ও দারউইশ রাসুলি থিতু হওয়ার চেষ্টা করলেও শ্রীলঙ্কার মিতব্যয়ী বোলিংয়ের সামনে চাপে পড়ে যান তাঁরা। সেই সুযোগে দাসুন শানাকা দুই ওভার বল করে দেন মাত্র ৮ রানে। আফগানিস্তানের জন্য সবচেয়ে হতাশার ছিল টানা ডট বল খেলতে থাকা। ১০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে তাই ৬৩ রানের বেশি করতে পারেনি তারা।
ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ফিল্ডিংও ছিল চোখে পড়ার মতো। কুশল পেরেরা বাউন্ডারি লাইন থেকে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচে বিদায় করেন রাসুলিকে। বলের গতি তাঁকে প্রায় বাউন্ডারির বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু এক পায়ে ভারসাম্য রেখে, বল উপরে ছোড়ার পর বাউন্ডারির ভেতরে এসে ক্যাচটি সম্পূর্ণ করেন পেরেরা। তাঁকে অবশ্য ছাপিয়ে গেছেন দুশমন্থ চামিরা। লং অনে মারা ইব্রাহিমের শট ছক্কা হবে বলে ধরা হচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে লাফিয়ে বলটি দুর্দান্তভাবে লুফে নেন চামিরা। ২৭ বলে ১ ছক্কায় ২৪ রানে ফিরতে হয় ইব্রাহিমকে।
এর মাঝে অবশ্য শানাকার বলে বোল্ড হন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তাই পরপর তিন ওভারে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
শেষ দিকে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন রশিদ খান। কিন্তু তিনি উপহার দিচ্ছিলেন ডট বল। শেষমেষ থুশারার বলে বোল্ড হন আফগান অধিনায়ক। ২৩ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রানে ফেরেন তিনি। তাঁর চলে যাওয়ার পর আফগানদের পুঁজি ১৪০ পেরোয় মোহাম্মদ নবির কল্যাণে। শেষ ওভারে ৩১ রান নিয়ে রান আউটের শিকার হন তিনি। ২২ বলে ৬০ রানের বিধ্বংসী এই ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৩ চার ও ৬ ছক্কায়। ২০ বলে আসা ফিফটি আফগানিস্তানের হয়ে যৌথভাবে দ্রুততম। অথচ ১২ রানে থাকার সময় তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন ভেল্লালাগে। এর কী মাশুলই না দিতে হলো শেষ ওভারে
লঙ্কানদের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন থুশারা। এ ছাড়া একটি করে শিকার চামিরা, ভেল্লালাগে ও শানাকার। কোনো উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিংয়ে ৪ ওভারে ১৮ রান দেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা।