২০১২, ২০১৬, ২০১৮, ২০২৫—চারবার এশিয়া কাপের শিরোপার কাছাকাছি গিয়েও বাংলাদেশ জিততে পারেনি শিরোপা। মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মর্তুজা থেকে শুরু করে আকবর আলী—সবারই তীরে এসে তরি ডোবার আক্ষেপ করতে হয়েছে। শিরোপার কাছাকাছি গিয়েও বারবার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়ছেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ।
কাতারের ওয়েস্ট এন্ড পার্ক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার সেমিফাইনালে ভারত ‘এ’ দলকে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। একই মাঠে গত রাতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ফাইনালটাও গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারে এরপর বাংলাদেশের ৭ রানের লক্ষ্য পাকিস্তান ২ বল হাতে রেখে তাড়া করে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আকবরদের স্বপ্নভঙ্গের পর নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন রুমানা। ৩৪ বছর বয়সী নারী লেগ স্পিনার লিখেছেন, ‘ইশ। একটুর জন্য হেরে গেলাম। আর কতবার এই আফসোস?’
টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া পাকিস্তান ‘এ’ দল পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায়। সেই রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ১৪ বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ ‘এ’। কিন্তু ভাঙনের শুরু এখানেই। বিনা উইকেটে ২২ রান থেকে মুহূর্তেই ৭ উইকেটে ৫৩ রানে পরিণত হয় আকবরের দল। অষ্টম উইকেটে রাকিবুল হাসান ও এস এম মেহেরবের ৩৭ রানের জুটিতে আশা তৈরি হয় বাংলাদেশের। কিন্তু দ্রুত ২ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ১৭.২ ওভারে ৯৬ রানে ৯ উইকেটে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
হাতে ১ উইকেটে শেষ ২ ওভারে যখন ২৭ রান দরকার, সে সময় ২০ রান নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই টেলএন্ডার ব্যাটার আবদুল গাফফার সাকলাইন ও রিপন মন্ডল। সেই ওভারে সাকলাইন ২ ছক্কা ও রিপন মেরেছেন ১ ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৫ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ইনিংস। সুপার ওভারে ৩ বলে ৬ রান করে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ম্যাচ হারলেও রাকিবুল, সাকলাইন, রিপনদের লড়াকু মানসিকতার প্রশংসা করেছেন রুমানা। ৩৪ বছর বয়সী লেগস্পিনার লিখেছেন, ‘যাই হোক, এটাই আমাদের শক্তি।সাবাস বাংলাদেশ।’
২০১২ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। মিরপুরে ১৩ বছর আগে তীরে এসে তরি ডোবার পর সাকিব আল হাসান-নাসির হোসেনদের কান্নার ছবি এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে তরতাজা। ২০১৬ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশকে কাঁদিয়েছিল ভারত। যার মধ্যে ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে শেষ বল পর্যন্ত লড়েছিল বাংলাদেশ।
পাকিস্তান শাহিনস গতকাল সুপার ওভারে জিতে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ তিনবার শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়ে। যার মধ্যে দুইবার তারা জিতেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৯ সালে মিরপুরে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা ‘এ’। একবার করে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে ভারত ‘এ’ ও আফগানিস্তান ‘এ’।