দুঃসময়ের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি—তিন সংস্করণ বাংলাদেশ খেলছে তিন অধিনায়কের অধীনে। তবু আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু করতে পারছে না দলটি। বাংলাদেশের এমন বাজে অবস্থায় দলের রোগ ধরতে পেরেছেন স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ।
পাল্লেকেলেতে গতকাল সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ প্রথম ৬ ওভারে করেছে ১ উইকেটে ৫৪ রান। প্রথম পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পরই তারা খোলসবন্দী হয়ে যায়। সপ্তম থেকে ১৬—এই ১০ ওভারে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ যোগ করেছে ৬২ রান। এই সময় তারা হারিয়েছে ৩ উইকেট। দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং করেছেন ১১০.৩৪ ও ১২৬.০৮ স্ট্রাইকরেটে।
মিরাজ-নাঈমের গত রাতের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে, টি-টোয়েন্টি নয়, বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলতে নেমেছে। তাঁদের ধীরগতির ব্যাটিংই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে। শ্রীলঙ্কার কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে মুশতাক বলেন, ‘বিশ্বাস করতে হবে এবং স্মার্ট, আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে। হারের ভয় করা চলবে না। চেষ্টা করে যেতে হবে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে।’
১৫৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ৪.৪ ওভারে ১ উইকেটে ৭৮ রান হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার স্কোর। লঙ্কানরা শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ৭ উইকেটে জিতেছে ১ ওভার হাতে রেখে। কুশল মেন্ডিস ৫১ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৩ রান করে হয়েছেন ম্যাচসেরা। শ্রীলঙ্কার তো প্রশংসা মুশতাক করেছেনই। একই সঙ্গে তিনি বিশ্বাস রাখতে বলছেন তাঁর শিষ্যদের ওপরও। যে ব্যাটিং বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছে, সেই ব্যাটিং ইউনিটের জ্বলে ওঠা জরুরি বলে মনে করছেন মুশতাক। বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ বলেন, ‘ব্যাটিং ইউনিটেও আমাদের ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে। আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন। এই ছেলেদের মাঝে সামর্থ্য রয়েছে ভালো ক্রিকেট খেলার। ৩০-৪০ রান পেলে ৭০+ যেতে হবে। তখনই পার্থক্য বোঝা যাবে। শ্রীলঙ্কাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। তারা (শ্রীলঙ্কা) দারুণ ইতিবাচক ক্রিকেট, আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেছে।’
বিধ্বংসী শুরুর পরও শ্রীলঙ্কার জয় দীর্ঘায়িত হয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের কারণেই। বিশেষ করে, দুই স্পিনার রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ বোলিং করেছেন ৬ ইকোনমিতে। দুজনেই নিয়েছেন একটি করে উইকেট। দুই স্পিনারের ৮ ওভার থেকে ৪৮ রান শ্রীলঙ্কা নিলেও অন্যান্য বোলারদের ওপর কী পরিমাণ অত্যাচার গেছে, সেটা না বললেও চলছে। মিরাজ-রিশাদকে নিয়ে মুশতাক বলেন, ‘একটি উদাহরণ দিচ্ছি। স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে আমি কাজ করে যাচ্ছি। রিশাদ, মিরাজদের নিয়ে আমি কাজ করছি। আজ দেখেছি বাঁহাতিদের বিরুদ্ধে রাউন্ড দ্যা উইকেটে বল করেছে। এসব ব্যাপার অনুশীলনে করে এসে ম্যাচে প্রয়োগ করছে তারা। ভালো ফলও এসেছে।’
১৩ জুলাই ডাম্বুলায় হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। এই ম্যাচ জিতলে সিরিজ সমতায় ফেরাবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হয়ে যাবে সিরিজ নির্ধারণী। কলম্বোর প্রেমাদাসায় ১৬ জুলাই হবে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি।