বিদেশে টি-টোয়েন্টি, টি-টেনের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে সাকিব আল হাসান খেলছেন নিয়মিত। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছেন ১৩ মাস। ঘরের মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) খেলার সুযোগ মিলছে না। এ অবস্থা কি চলতেই থাকবে? দেশের সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক মনে করেন সাকিবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাষ্ট্র।
সাকিবের দেশে ফিরতে না পারার কারণটা যে রাজনৈতিক, সেটা সকলেরই জানা। ৫ আগস্ট পতন হওয়া আওয়ামী সরকারের সংসদ সদস্য পরিচয়ই এখানে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর নাম উঠেছে পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলা, চেক প্রতারণার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায়। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হবে জাতীয় নির্বাচন। দেশের শাষণভার নেবেন নির্বাচিত দল। যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে সাকিবের কি দেশে ফেরার সুযোগ হবে—এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে পরশু দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমিনুল বলেন, ‘আপনি যে বিষয়টি বলছেন, তা হচ্ছে, যেহেতু সাকিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা হয়েছে, সেটা কিন্তু অবৈধ সরকারের ৩০০ জনের একজন এমপি হওয়ায় সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে যখন ওই স্বৈরাচার সরকার মানুষকে যেভাবে হত্যা করেছে, যেভাবে গুম করেছে, এটার দায়ভার ৩০০ জনের একজনকে নিতে হবে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এটার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্র নেবে।’
সাবেক ফুটবলারের পাশাপাশি আমিনুলের রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দেশের এই সাবেক ফুটবলার। উপমহাদেশের অন্যান্য রাজনীতিবিদদের মতো তিনিও নানারকম হামলার শিকার হয়েছেন। যদিও এসব ব্যাপারকে মোটেই সমর্থন করেন না দেশের সাবেক এই ফুটবলার। আজকের পত্রিকাকে আমিনুল বলেন, ‘একজন সাবেক জাতীয় ফুটবলার, সাবেক জাতীয় অধিনায়ক হিসেবে যেটা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করেছি, আমাকে প্রতি মুহূর্তে মামলা-হামলায় জর্জরিত করেছে। শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছি। আমাকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। রক্তাক্ত হয়েছি। এই ধরনের পরিস্থিতি যেন কোনোভাবে খেলোয়াড়ের সঙ্গে না হয়, এটা আমি কখনোই চাই না এবং সমর্থনও করি না। একজন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হচ্ছে, ভিন্নমত থাকতে পারে। আমি আমার মতামত দিয়ে আমার কাজ যদি সফলভাবে শেষ করতে পারি, এটা আমার যোগ্যতা অনুযায়ী করব। কিন্তু ভিন্নমতের কারণে যে আমার ওপরে বা অন্য কারও ওপরে জুলুম-নির্যাতন হবে, সেটাকে কখনোই সমর্থন করি না এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো জুলুম নির্যাতন হবে না।’
বাংলাদেশের জার্সিতে সাকিব সবশেষ খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে। ভারতের বিপক্ষে সেই টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল কানপুরে। সেই টেস্টের আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন মিরপুরে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁকে নিয়েই শুরুতে দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু নানা জটিলতায় ঘরের কাছাকাছি এসেও ফিরতে হয়েছিল বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারকে। ক্রিকবাজে কদিন আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব জানিয়েছেন, মিরপুরে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে চান তিনি।
আরও পড়ুন: