দুবাইয়ে গত রাতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সুপার ফোরের ম্যাচে ছিল না কোনো জটিল সমীকরণের খেলা। অলিখিত সেমিফাইনালের বাধা যে টপকতে পারবে, সেই দল কাটবে ফাইনালের টিকিট। বাংলাদেশ সেখানে নিজেদের হাতে থাকা ম্যাচ ফসকেছে বলে মনে করেন ওয়াসিম আকরাম।
ফাইনালে উঠতে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ১৩৬ রান। ওভারপ্রতি ৭-এর কম রান দরকার হলেও তাওহীদ হৃদয়-পারভেজ হোসেন ইমনদের কাছে মনে হচ্ছিল তাঁরা ২০০ ছুঁইছুঁই লক্ষ্য তাড়া করতে যাচ্ছেন। তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে শাহীন শাহ আফ্রিদিকে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন ইমন (০) ও হৃদয় (৫)। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ‘পথের কাঁটা’ শামীমকে (৩০) দূর করে পাকিস্তানের জয় এক রকম নিশ্চিতই করে ফেলেন শাহীন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রানে আটকে যায়।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান অলিখিত সেমিফাইনাল শেষে বাংলাদেশি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ওয়াসিম। পাকিস্তানি কিংবদন্তি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাটিংটাই তাদের (বাংলাদেশ) ভুগিয়েছে। বোলিংয়ে তো ভালোই করেছে। ১৩৫ রানের মধ্যে পাকিস্তানকে আটকে দিয়েছে। নতুন বলে দেখে খেলা উচিত ছিল। ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান করলেই হতো। তবে পাকিস্তানের মতো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে প্রথম ৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে। বাজে শট খেলেছে তারা।’
বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া পাকিস্তান বেশ ধুঁকতে থাকে। ১০.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ৪৯ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান, যার মধ্যে রিশাদ হোসেন প্রথম চার উইকেটেই অবদান রেখেছেন। সাহিবজাদা ফারহান ও সাইম আইয়ুবের ক্যাচ দুটি ধরেছেন রিশাদ। এরপর ফখর জামান ও হুসেইন তালাতের উইকেট দুটি রিশাদ নিয়েছেন। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে অধিনায়ক সালমান আলী আঘা আউট হলে পাকিস্তানের স্কোর ১০০ পেরোনো নিয়েই ছিল শঙ্কা। শেষের ঝড়ে সালমানের পাকিস্তান ২০ ওভারে ৮ উইকেটে করে ১৩৫ রান।
পাকিস্তানকে অল্প রানে বেঁধে রাখায় তাসকিন আহমেদ-মোস্তাফিজুর রহমানদের কৃতিত্ব দিয়েছেন ওয়াসিম। তাসকিন ৪ ওভারে ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ফারহান, মোহাম্মদ নাওয়াজ, শাহিন-এই তিন ব্যাটার আউট হয়েছেন তাসকিনকে তুলে মারতে গিয়ে। বাংলাদেশের বোলারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘তাসকিন গত ২-৩ বছরে দারুণ করছে। সে যেভাবে বোলিং করে উইকেট নেয়। আসলে সেই দলের মূল বোলার। মোস্তাফিজুর রহমানও বেশ ভালো। রিশাদ হোসেনও দুর্দান্ত। তাকে এবার পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সে ভালো খেলতে দেখেছি। অনেক প্রতিভাবান ও তুখোড় ফিল্ডার। ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল।’
ভারতের কাছে হারের পর বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রুবেল হোসেন। অলিখিত সেমিফাইনালে গত রাতে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় রুবেল বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ শেষে রুবেল তিনটা কান্নার ইমোজি দিয়েছেন। বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হচ্ছে। পরশু তারা শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুবাইয়ে।
আরও পড়ুন: