বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো দায়বদ্ধতা নেই। সেখানে যা খুশি তা-ই বলা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সামাজিক ব্যক্তিত্ব কিংবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। মব তৈরি করা হচ্ছে। এতে দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া এখন শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয় যে মনে হয় একধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। মব তৈরি করা হচ্ছে। মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা করা হচ্ছে। একজন মানুষকে ভিন্নভাবে প্রচার করে তাকে হেয় করা হচ্ছে। এর ফলে আমাদের গণতান্ত্রিক যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশ ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাবে’, অনুষ্ঠানে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই অপেক্ষা করছি, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে। তবে একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অপরিহার্য। ভিন্নতা থাকবেই। আমি আপনার সঙ্গে একমত না-ও হতে পারি। কিন্তু আপনার মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের দেশে ভিন্নমত মানেই শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭৫ সালে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বন্ধ থাকা পত্রিকাগুলো পুনরায় চালু করেছিলেন। পরবর্তীকালে খালেদা জিয়াও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করতে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফায় গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এটা শুধু কথার কথা নয়, এটা দলটির পরীক্ষিত কমিটমেন্ট।
১৫ বছর ধরে ‘অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যমকে ধ্বংস’ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করলে সমস্যার সমাধান হয় না। গত ১৫ বছরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যমকে ধ্বংস করা হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ, এ জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে ঐক্যবদ্ধ হন। নিজেদের দাবিদাওয়া, চাকরির নিরাপত্তা, কর্মপরিবেশ—এসব নিয়ে মালিকপক্ষ ও সরকারের সঙ্গে শক্তভাবে কথা বলা উচিত। কোনো দলের ওপর নির্ভর করলে অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।’
বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।