জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে দলেরই কিছু নেতা যে অভিযোগ করেছেন, তা অস্বীকার করেছেন মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ভোটে যেতে টাকা নিয়েছি, তার প্রমাণ দিতে পারলে পদত্যাগ করব।’
আজ সোমবার রাজধানীর বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বাংলাদেশের কোনো লোক যদি বলতে পারে আমি বা চেয়ারম্যান কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি, তাহলে পদত্যাগ করব।’
যাঁরা দলীয় প্রতীক লাঙ্গলে নির্বাচন করেছেন, তাঁদের মধ্যে পরাজিত কিছু প্রার্থী টাকা না পাওয়ায় মনের ব্যথায় যা তা বলছেন বলে মহাসচিব পাল্টা অভিযোগ করেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাকক্ষে বৈঠক করে দলের অনেক পরাজিত প্রার্থী টাকা নিয়ে ভোটে অংশ নেওয়া ও ভোটে দলের ভরাডুবির জন্য চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে অভিযুক্ত করেন।
প্রার্থীদের নির্বাচনে নামিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চেয়ারম্যান ও মহাসচিব খরচের টাকা দেননি বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন।
মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে মনে করেছেন আওয়ামী লীগ যেহেতু ২৬ আসন দিয়েছে, ভোটে আসার জন্য শত শত কোটি টাকা দিয়েছে। দুই-একজন ছাড়া অন্য বেশির ভাগ অভিযোগকারীর আসল ব্যথা চেয়ারম্যান ও মহাসচিব শতকোটি টাকা পেয়েছে। কিন্তু তাদের দেওয়া হয়নি।’
নির্বাচন ঠিকমতো হয়নি বলে দলের অনেক প্রার্থী হেরেছেন, এটা অনেক পরাজিত প্রার্থীর আসল ব্যথা নয় বলে দাবির চুন্নুর।
মহাসচিব প্রশ্ন তোলেন, ‘সরকার কেন টাকা দেবে। সরকার যদি টাকা দেয়, তাহলে সেটা জানার কি বাকি থাকবে?’
সংগঠনবিরোধী তৎপরতার অভিযোগে জাপার চেয়ারম্যান গত শুক্র ও রোববার মোট চারজনকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেন। তাঁরা হলেন, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায় ও মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু ও ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ ইয়া চৌধুরী।
১০ জানুয়ারি চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া ও গতকাল দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে টাকা মেরে দেওয়ার অভিযোগ তোলার পর এই চার নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এর বাইরে চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও গাজীপুর মহানগর কমিটির সভাপতি এম এম নিয়াজউদ্দিন গতকাল দলীয় সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন।