হোম > রাজনীতি

বাহাত্তরের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যের ভিত্তিকে অস্বীকার করা হয়েছে: জোনায়েদ সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মুজিবনগর সরকারের ঘোষিত অঙ্গীকার—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার—প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ১৯৭১ সালের মধ্য দিয়ে প্রথম সংবিধানে আমরা যে একটা ঐক্যের ভিত্তি তৈরি করলাম, তাকেই একভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। সেটা এমনকি সংবিধানে স্থান পায়নি।

আজ রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। তাঁর নেতৃত্ব দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা প্রত্যেক নাগরিকের জন্য। তাকে আমরা অবলম্বনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ১৯৭২ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাতি যে প্রতিশ্রুতি তৈরি করেছিল, যে প্রতিশ্রুতি একটি ঐক্য তৈরি করেছিল, সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশ পরিগঠিত হয়নি, পরিচালিত হয়নি।’

দেশ পরিগঠনে সংবিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা বলেন, ‘সেই সংবিধানে আমরা লক্ষ করেছি যে, ১৯৭১ সালের মধ্য দিয়ে প্রথম সংবিধান কিংবা আমরা যে একটা ঐক্যের ভিত্তি তৈরি করলাম, তাকেই একভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। সেটা এমনকি সংবিধানে স্থান পায়নি।’

জনগণ রিপাবলিকের কেন্দ্রবিন্দু মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জনগণের হাতেই একটা রিপাবলিকের ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। সেই দিক থেকে জনগণকে নিয়েই যদি রাষ্ট্র পরিগঠিত না হয়, জনগণকেই অংশগ্রহণ করানো কেবল নয়, জনগণকেই প্রাধান্যের জায়গায় রাখা, এটা যখন দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মতৎপরতার মধ্যে না থাকে, তখন ধীরে ধীরে এমন এক ধরনের ক্ষমতার সম্পর্ক তৈরি হয়, যারা রাষ্ট্র পরিচালনার জায়গায় ধীরে ধীরে শাসক হতে থাকে, একধরনের অধিপতির রূপ নেয় এবং এটা থেকে কর্তৃত্ববাদ, ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতন্ত্র জন্ম নিয়ে থাকে।’

১৯৭২ সাল থেকে রাষ্ট্র পরিগঠন একদল লুটেরার হাতে বন্দী হয়েছিল দাবি করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সেই লুটপাটের শাসনকে জায়েজ করার জন্য জনগণের মধ্যে নানা বিভাজন তৈরির চেষ্টা আমরা দেখেছি। যেখানে জনগণের ঐক্য তৈরি করা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। জনগণের মধ্যে নানান পার্থক্য থাকবে, দ্বন্দ্ব থাকবে, সেগুলো মীমাংসা কারা রাষ্ট্রের কাজ। কিন্তু রাষ্ট্র সেখানে উল্টো জনগণকে নানাভাবে বিভাজিত করে তার শাসন জারি রাখার চেষ্টা করেছে।’

জনসম্মতি ছাড়া দেশে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা প্রত্যেকেই রাষ্ট্রকে ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামো ব্যবহার করেছে। এই রাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামো যেহেতু স্বৈরতান্ত্রিক শুরু থেকেই, সমস্ত ক্ষমতায় একজন ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে। কোনো জবাবদিহির জায়গা রাখা হয়নি। ফলাফল হিসেবে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, যারা এই ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চেয়েছে, তারাই রাষ্ট্রটাকে যত রকমভাবে ব্যবহার করা সম্ভব ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পকেটে ঢুকিয়ে ফেলে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। তার পরিণতি কতটা সর্বদিক থেকে ভয়াবহ হয়েছে, আমরা অর্থনৈতিক দিক থেকে লুণ্ঠনের কাহিনি শুনেছি, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে। এখানে ৪৬০ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতি বলা হয়, যদিও সেটা বাড়িয়ে বলা হয়।’

সাকী বলেন, ‘আমরা দেখেছি কীভাবে মানুষের বিভাজন তৈরি করে সামাজিক একটা ভয়ংকর সংকট তৈরি করা হয়েছে। সর্বশেষ রাজনৈতিকভাবে তাদের শাসন টেকাতে গুম-খুন মানুষের সমস্ত অধিকার হরণ এবং বিরোধী দলকে অবিশ্বাস্য নির্যাতন, লক্ষ লক্ষ মামলা। সর্বশেষ জুলাই-আগস্টে যে ভয়ংকর নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, এটা দেশের শাসক হিসেবে থেকে এবং একটা ঐতিহ্যবাহী দল তার নেতৃত্ব দিয়ে, কীভাবে ক্ষমতা রক্ষার জন্য দেশের মানুষকে তার সন্তানদের নির্বিচারে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে। এই পরিণতিটা আমরা লক্ষ করেছি।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সেখানে সংস্কার ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থান হিসেবে হাজির হয়েছে। সেই সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কমিশন গঠন করা, যাতে করে প্রস্তাবগুলো সুশৃঙ্খলভাবে অংশীজনদের সামনে আসে, তারা সেগুলোতে মতামত দিতে পারেন। এবং মোটামুটি একটা ন্যূনতম ঐকমত্য তৈরি করা যায়।’

জুলাই সনদের বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, যতগুলো প্রস্তাব এসেছে, সেখানে অংশীজনদের ঐকমত্য যেটাতে তৈরি হবে সেটাই জাতীয় সনদ, একটা জুলাই সনদ আকারে হাজির হবে। যেসব বিষয়ে দ্বিমত আছে, সেগুলো সমাধানের রাস্তা কী, সেই পদ্ধতি নিয়ে ভেবেছি। আমরা মনে করি, দ্বিমত নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। সেটা একটা নির্বাচনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। জনগণ যে মতামতের ওপর ভরসা রাখবেন, যাঁদের বিজয়ী করবেন, তাঁরাই আসলে জনগণের মতামতের ওপর রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। যতটুকুতে আমরা ঐকমত্য হয়েছি, সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে যাতে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নতুন বন্দোবস্তে যাওয়া সম্ভব হয়। সে জন্য ঐকমত্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন।’

জরিপে হতাশ হয়ে কেউ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতে পারে: নজরুল ইসলাম খান

জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে: তারেক রহমান

গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট: বাম-ডানের সমন্বয় ঘটিয়ে জোট বড় করার চেষ্টা

নির্বাচনী প্রচারণা: ভোটযুদ্ধে বড় ইস্যু ৭১

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

গত ১৬ বছরে যা দেখেছি, ৫ আগস্টের পরে তার পরিবর্তন হয়নি: তারেক রহমান

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

আখতারের উদ্দেশে জামায়াতের বিবৃতিকে ‘মিথ্যাচার’ বলল এনসিপি