বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নারীদের প্রতি সহিংসতা ও হেনস্তার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি উদ্বেগজনক। এভাবে উগ্র গোষ্ঠীর উসকানিতে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে।
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, একের পর এক নারীকে হেনস্তা ও আক্রমণ এবং সামগ্রিক বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, তা রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে কেন আজ নারীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং এর পেছনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, সেটি যাচাই করা প্রয়োজন। এই অসভ্যতা ও সহিংসতার পেছনে কোনো উগ্রগোষ্ঠীর উসকানি বা মদদ থাকতে পারে, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে এবং যাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি অতি রক্ষণশীল রাষ্ট্র বানানো, যেন নারীরা নিজ দেশে অধিকারহীন হয়ে পড়েন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আরও বলেন, নারীর মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিএনপি বদ্ধপরিকর। নারীর ক্ষমতায়নে বিএনপি সরকার ঐতিহ্যগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয় মহিলা সংস্থা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনসহ নানামুখী উদ্যোগ নেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা চালু, ধর্ষণ ও অ্যাসিড সন্ত্রাস দমন আইন প্রণয়ন, কর্মজীবী নারীদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ নারীর উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন।
আগামীতে সরকার গঠন করলে নারীদের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে বিএনপি কী কী করবে তার ফিরিস্তি তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্ষমতায় গেলে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, যা পরিবারের মায়ের নামে থাকবে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ, কর ছাড় ও বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। নারী নির্যাতন, যৌতুক, অ্যাসিড নিক্ষেপ ও মানবপাচার কঠোরভাবে দমন করা হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে—নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হবে। আমরা নারীবান্ধব, নিরাপদ ও সমঅধিকারের সমাজ গড়ে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।