বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিগত ১৬ বছরে দেশে যে রাজনৈতিক ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিরাজ করেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পরেও সেটির কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। তিনি বলেছেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে আমরা যা দেখেছি, দুঃখজনক হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে কেন জানি মনে হচ্ছে, সেটির বোধ হয় পরিবর্তন হয়নি। এটির পরিবর্তন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’
আজ সোমবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন তারেক রহমান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ব্যক্তিগত প্রার্থীর চেয়ে দলের প্রতীকই আসল। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভাইরে তুমি তো প্রার্থীর জন্য কাজ করছ না, তুমি তো তোমার ধানের শীষের জন্য কাজ করছ। এখানে প্রার্থী মুখ্য নয়, এখানে মুখ্য হচ্ছে তোমার দল বিএনপি, এখানে মুখ্য হচ্ছে ধানের শীষ, এখানে মুখ্য হচ্ছে দেশ।’
তারেক রহমান স্বীকার করেন, কোনো কোনো এলাকায় পছন্দের প্রার্থী হয়তো মনোনয়ন পাননি বা প্রার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কম থাকতে পারে। তবুও তিনি নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত পছন্দ ভুলে দলের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
তারেক রহমান গণতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘বিগত যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি, কেন করেছি? কারণ, সেখানে কোনো জবাবদিহি ছিল না। মানুষ বেঁচে আছে কি মরে যাচ্ছে, তার কোনো জবাবদিহি ছিল না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মতে, একমাত্র গণতন্ত্র সমাজে, দেশে ও রাষ্ট্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে একমাত্র নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার।
তারেক রহমান গত বছরের ৫ আগস্টের আন্দোলনের মূল কারিগর হিসেবে দেশের সাধারণ মানুষকে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড দেশের মানুষ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, একজন গৃহবধূ; মুদিদোকানি; রিকশা, ভ্যান ও সিএনজি অটোরিকশাচালক; বাসের হেলপার; জনতা; মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজের ছাত্র—সবাই ছিলেন ওই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। তিনি বলেন, ওই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড শিশুরাও।
তরুণসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তোমাদের ওপর নির্ভর করছে। তোমরা যদি এগিয়ে আসো, তোমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হও, তাহলে এ দেশের সামনে একটি ভবিষ্যৎ আছে। তা না হলে একটি ভয়াবহ কিছু হয়তো অপেক্ষা করছে।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অন্য নেতারা বক্তব্য দেন। তারেক রহমান খাল খনন, পরিবেশ উন্নয়ন, বর্জ্য অপসারণ, ক্রীড়ার উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূরীকরণ, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ডসহ বিএনপির বিভিন্ন পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে সেগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন।