হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

গাজা বনাম লুটপাট

সম্পাদকীয়

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের মানুষই সোচ্চার হয়েছে। বাংলাদেশের ৫০টির বেশি জেলায় হয়েছে বিক্ষোভ-সমাবেশ। ফিলিস্তিনি মানুষকে পাখির মতো হত্যা করছে ইসরায়েলিরা। বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গত সোমবার ক্লাস করেননি, যোগ দিয়েছেন বিক্ষোভে। তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষও নেমে এসেছে রাজপথে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। এত বড় বিপর্যয় সারা পৃথিবীর বিবেকসম্পন্ন মানুষকে তাড়িত করছে।

‘ফিলিস্তিনি ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস’ নামের একটি জোট গত সোমবার বিশ্বব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ এই ডাকে সাড়া দিয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ সব সময়ই ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে, ভবিষ্যতেও দাঁড়াবে। তবে তার চেয়েও জরুরি বিষয় হলো, ইসরায়েলি এই আগ্রাসনের অবসান ঘটানো। বিশ্বের সব মানুষ এক হয়ে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাবে, ফিলিস্তিনিরা নিজ বাসভূমে পরবাসী হবে না—এটাই এখন সবচেয়ে বড় চাওয়া।

ফিলিস্তিনি জনসাধারণের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ যখন হচ্ছে, তখন একদল সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্ত কেএফসি, পিৎজা হাটসহ বেশ কিছু রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর চালিয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে আন্তর্জাতিক জুতার ব্র্যান্ড বাটার শোরুমে। ফিলিস্তিনি তথা গাজার মানুষের প্রতি আমাদের দেশের অগণিত মানুষের সাহসী সমর্থনকে ম্লান করে দিল এই লুটপাট ও ভাঙচুর। বিক্ষোভ, সমাবেশ জানিয়েছে, আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে আছি। লুটপাট- ভাঙচুর বুঝিয়েছে, আমরা আমাদের অবস্থানকে বিতর্কিত করে তুলেছি। এই ঘটনাকে আওয়ামী লীগ কিংবা আওয়ামী লীগের দোসরদের কাজ বলে পার পাওয়া যাবে না। যারা এই দুর্বৃত্তপনার সঙ্গে যুক্ত, তারা আগেভাগেই লুটতরাজ চালাবে বলে ঠিক করেছিল বলে ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমনকি ক্ষমতাবান কেউ কেউ তাঁদের ফেসবুকে ইসরায়েলি পণ্য হিসেবে দেখিয়ে তা ছুড়ে ফেলা নিয়ে এমন কিছু ভিডিও শেয়ার করেছিলেন, যা স্বার্থান্বেষীদের এই ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে উদ্বুদ্ধ করে থাকতে পারে।

চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় লুটপাট চলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে, যারা ইসরায়েলি পণ্য বলে ভাঙচুর চালাচ্ছে, তারাই লুটপাট করছে। কেউ কেউ বাটার শোরুম থেকে জুতা নিয়ে যাচ্ছে, কেএফসি থেকে কোমল পানীয় নিয়ে যাচ্ছে—এ রকম দৃশ্যও দেখা গেছে। এই কাজ যেকোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ করতে পারে না, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এই দুর্বৃত্তপনা এ রকম একটা সময়ে ঘটল, যখন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ঢাকায় চার দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন’ শুরু হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন: পুলিশ বা গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে কি লুটপাট হতে পারে, এ রকম কোনো আগাম সংবাদ ছিল না? এখন সিসিটিভি দেখে দুর্বৃত্তদের ধরপাকড় চলছে। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। উগ্রতা দিয়ে মহৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা যায় না—এ কথা বুঝতে হবে।

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল