হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

দালালদের দৌরাত্ম্য

সম্পাদকীয়

দেশের জনগণের প্রত্যাশা ছিল রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সরকারি সেবা পেতে আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না। কিন্তু সে আশা যে দুরাশায় পরিণত হয়েছে, সেটা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চাঁদপুর কার্যালয়ের দালালদের কর্মকাণ্ডই বলে দিচ্ছে। কারণ, এখানকার দালালেরা বিআরটিএ কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিলে বসে তাদের অপকর্মগুলো করছে। এ কারণে সেবাগ্রহীতাদের পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, আর এই ভোগান্তির নেপথ্যে রয়েছে দালাল চক্র এবং কার্যালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মীর যোগসাজশ। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ৩ জুলাই একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

চাঁদপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে সরকারি কর্মীর সংখ্যা মাত্র তিনজন—একজন মোটরযান পরিদর্শক, একজন সহকারী পরিচালক (প্রকৌশলী) এবং একজন দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মচারী। এই স্বল্পসংখ্যক কর্মী থাকার সুযোগ নিয়েই একটি শক্তিশালী দালাল চক্র গড়ে উঠেছে। মো. শহীদ, মো. শাহজাহান, মো. মানিক ও মোহাম্মদ আলী নামের চারজনের বিরুদ্ধে সরাসরি সরকারি চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করে দালালি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া অটোরিকশাচালক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রিপন এবং ট্রাক, লরি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মন্টুও দালালি কার্যক্রমে জড়িত। দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মচারী জিয়া হক এই দালালদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেন বলেও অভিযোগ আছে।

ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আঙুলের ছাপ দিতে আসা শত শত সেবাগ্রহীতা প্রতিনিয়ত দালালদের হাতে জিম্মি হচ্ছেন। সরকারি ফি পরিশোধ করার পরও নানা রকম ভুল দেখিয়ে তাঁদের ভোগান্তিতে ফেলা হয়। অথচ দালালদের মাধ্যমে টাকা দিলে কাজ দ্রুত ও সহজে হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এই দালাল চক্রের এতটাই প্রভাব যে, সাংবাদিকরা তাদের দালালি কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করলে তারা হুমকি-ধমকি দেয় বা নিজেদের ক্ষমতাধর আত্মীয়স্বজনের পরিচয় দেয়। এমনকি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো অফিসের একজন পিয়নের বিরুদ্ধেও অর্থের বিনিময়ে আঙুলের ছাপের কাজ ত্বরান্বিত করার অভিযোগ রয়েছে।

শুধু ব্যক্তিগত দালালিই নয়, মোটরসাইকেল বিক্রয় কেন্দ্রগুলোর বিক্রয়কর্মী বা ম্যানেজাররাও এই দপ্তরে দালাল হিসেবে কাজ করেন। তাঁরা মোটরসাইকেল নিবন্ধনে অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। ফরিদগঞ্জ থেকে আসা একজন জানান, সুমাইয়া মোটরস নামের একটি প্রতিষ্ঠান তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ হাজার টাকা নিয়েছে এবং লাইসেন্সপ্রাপ্তির সমস্ত কাজ তারাই করে দেবে বলে জানিয়েছে।

একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এভাবে চলতে পারে না। এই অফিসে প্রয়োজনের তুলনায় লোকবলের সংকট আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে দালালেরা। এই অনিয়মের চক্র ভাঙতে হলে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। দালালদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে কার্যালয়ের মধ্যে থেকে যাঁরা দালালদের সঙ্গে যোগসাজশ করেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। কারণ, কর্মকর্তারা সুযোগ না দিলে দালাল চক্র অপকর্ম করার সাহস পেত না।

এর বাইরে পুরো প্রক্রিয়াটাকে স্বচ্ছ করার জন্য সেটিকে ডিজিটালাইজড করা গেলে দালালদের অপকর্ম বন্ধ করা সম্ভব। কর্তৃপক্ষের এদিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার।

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন