হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

নামের মিলে ১৭ মাস জেলে!

সম্পাদকীয়

একজনের নাম হাসিনা আক্তার। আরেকজনের নাম হাসিনা বেগম। দুজনের নামের প্রথম অংশ এক হলেও তাঁদের দুজনের স্বামীর নাম এক—হামিদ হোসেন। এই মিলের কারণে অপরাধী হাসিনা আক্তারের বদলে নির্দোষ হাসিনা বেগমকে ১৭ মাস জেলে থাকতে হয়েছে। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে এবং ঘটনা সত্য বলে প্রমাণ হওয়ায় আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন হাসিনা বেগম। এখন প্রশ্ন হলো, যাদের ইচ্ছাকৃত ভুল কিংবা গাফেলতি বা দায়িত্বহীনতার কারণে এই নির্দোষ নারীকে এক বছর পাঁচ মাস কারাগারে কাটাতে হলো, তারা কি তাদের এই অপরাধের কোনো শাস্তি পাবে না? যদি এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, যারা একজন

অসহায় নারীর জীবন থেকে ১৭টি মাস কেড়ে নিয়েছে, তাদের যদি আইনের আওতায় না আনা হয়, তাহলে হাসিনা বেগম কারামুক্ত হয়েও শান্তি বা স্বস্তি পাবেন না।

টেকনাফ পৌর এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বেগম এখন ন্যায়বিচার আশা করছেন। তাঁর এই আশা করা অন্যায় বা অন্যায্য নয়।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলি থানার মইজ্জারটেক পুলিশ চেকপোস্ট এলাকা থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ হাসিনা আক্তার নামের এক নারী এবং তাঁর স্বামী হামিদ হোসেনকে আটক করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। মামলায় নয় মাস জেল খাটার পর উচ্চ আদালতের আদেশে হাসিনা আক্তার কারাগার থেকে ছাড়া পান। ২০১৯ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর পঞ্চম আদালতের বিচারক মামলার রায়ে ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। টেকনাফ থানা পুলিশ ১৬ ডিসেম্বর হাসিনা আক্তারের পরিবর্তে হাসিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

এটা কি পুলিশের ইচ্ছাকৃত ভুল না, নামের মিলের বিভ্রাট তা এখনও পরিষ্কার নয়।

একজন আইনজীবী বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে এ বিষয়ে তদন্ত করে টেকনাফ পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই প্রতিবেদন আদালতে জমা হওয়ার পর এটা স্পষ্ট হয় যে সাজা ভোগকারী নারী ‘প্রকৃত আসামি নন’। হাসিনা আক্তারের বদলে হাসিনা বেগম জেল খাটছেন। সবশেষে হাসিনা বেগম মুক্তি পেলেও তাঁকে যাদের ভুলে বা উদ্দেশ্যমূলক কারাসাজিতে জেলজীবন ভোগ করতে হলো তাদের খুঁজে বের করার বিষয়টি সামনে এসেছে। পুলিশের এমন খামখেয়ালিপনা বা অতিতৎপরতার অসহায় শিকার হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। আগেও এ রকম ‘ভুল’ আসামির কারাভোগ করার ঘটনা ঘটেছে। এমনিতেই আইনের ধীরগতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা আছে, অনেক কথা আছে। তার ওপর যদি পুলিশের ভুলে নির্দোষ মানুষকে কারাবাস করতে হয়, তাহলে সেটা অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার। আমরা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট সবার অধিক সতর্কতা ও মনোযোগ কামনা করছি।

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন