হোম > জাতীয়

বঙ্গবন্ধু ও মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বহাল থাকছে

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা

সমালোচনার মুখে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরাসরি যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি, তাঁদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগী হিসেবে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বহাল রাখছে সরকার।

মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা বদলাতে গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সংশোধিত জামুকা অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন যাঁরা বিদেশে থেকে জনমত গঠন করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত; মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যাঁরা পরবর্তীকালে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড়কে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে রাখার প্রস্তাব করা হয়।

এর ফলে বঙ্গবন্ধুসহ মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় না থেকে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের তালিকায় চলে যেত। জামুকা অধ্যাদেশের এই খসড়া প্রকাশ করার পর এ নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল। অধ্যাদেশের খসড়াটি পাসের জন্য ৬ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করা হয়। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ তা পর্যালোচনা করে পুনরায় উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়।

সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জামুকা অধ্যাদেশের খসড়া পর্যালোচনা করে সেখানে মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যাঁরা পরবর্তীকালে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন তাঁদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রেখে নতুন খসড়া করেছে। এই খসড়া পাসের জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপনের কথা রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি করেনি উপদেষ্টা পরিষদ। তবে বঙ্গবন্ধু এবং মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি থাকা উচিত বলে মত দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

এদিকে জামুকা আইন সংশোধন হওয়ার পরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগীদের নাম আলাদা করা হবে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই কাজ করবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে সহযোগীদের নাম আলাদা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীর তালিকায় যাঁরা থাকবেন, তাঁরা আগের মতোই সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

জামুকার সুপারিশ অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়স ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি সংশোধিত পরিপত্র জারি করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই হিসেবে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর যেসব মুক্তিযোদ্ধার বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস ছিল, তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় সংশোধিত খসড়ায় এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। মামলা নিষ্পত্তির পর বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধার সর্বনিম্ন বয়স নতুন করে নির্ধারণ করবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স সাড়ে ১২ বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর করার বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স সাড়ে ১২ বছর করা হয়েছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স ১৪ বছর করা হলে প্রভাবশালী কয়েক শ মানুষের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল হয়ে যাবে।

আরও খবর পড়ুন:

হাদির খুনিদের আশ্রয় দেওয়া দুই ভারতীয়কে আটক করেছে মেঘালয় পুলিশ: ডিএমপি

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সাল ও তাঁর সহযোগী ভারতে পালিয়েছেন—জানাল ডিএমপি

শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্র: ১৩০ কোটি খরচ না করায় ক্ষতি ৩০০০ কোটি টাকা

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুমোদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানাল বিএনটিটিপি

প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর শপথ কাল

সুষ্ঠু ভোটের ব্যাপারে সরকার সিরিয়াস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন সোমবার, ঢাকার ৬ জেলায় এ পর্যন্ত সংগ্রহ ৫০৯টি

তারেক রহমান ও জাইমার ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন, রোববার উঠবে কমিশনে