সামরিক ও সরকারি বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি ছোঁড়ার সক্ষমতা সম্পন্ন সব ধরনের অস্ত্র নিষিদ্ধ। নির্দিষ্ট বোরের অস্ত্র, স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র এবং সামরিক মানের যন্ত্রাংশসম্পন্ন যেকোনো আগ্নেয়াস্ত্রের ওপর রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা।
বাংলাদেশে বেসামরিক নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ আছে। এর আওতায় কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও নির্দিষ্ট বোরের অস্ত্র নিষিদ্ধ হিসেবে গণ্য হয়, যেগুলোকে ‘প্রোহিবিটেড বোর’ (Prohibited Bore-PB) বা পিবি অস্ত্র বলা হয়। এসব অস্ত্র মূলত যুদ্ধক্ষেত্র বা সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত।
২০১৬ সালে প্রণীত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা’ নীতিমালা এবং পরিশিষ্ট-১ অনুযায়ী নিচের তালিকাভুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র ও নির্দিষ্ট বোরের অস্ত্রগুলো বাংলাদেশে নিষিদ্ধ—
নিষিদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্রের ধরন
১. মেশিন গান ও লাইট মেশিন গান (Machine Guns/Light Machine Guns)
– এই ধরনের অস্ত্র একবার ফায়ার করলে একাধিক গুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হয়।
২. সেলফ লোডিং ও অটো রাইফেল (Self-loading & Auto Rifles)
– পয়েন্ট টু টু (.22) বোর ছাড়া সব ধরনের সেলফ লোডিং বা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিষিদ্ধ।
৩. মেশিন কারবাইন, মেশিন পিস্তল ও সাবমেশিন গান (Machine Carbines, Machine Pistols & Sub Machine Guns)
– ছোট আকৃতির হলেও এই অস্ত্রগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাধিক গুলি ছুঁড়তে সক্ষম।
নিষিদ্ধ বোর/ক্যালিবারের অস্ত্র
সামরিক মানের গুলি ছুঁড়তে সক্ষম নিম্নোক্ত ক্যালিবার বা বোরের অস্ত্রসমূহ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত—
বাড়তি বিধিনিষেধ
৪. একই বোরের অস্ত্র হলেও সার্ভিস অ্যামুনিশন (অর্থাৎ সরকারি বা সামরিক মানের গুলি) ছুঁড়তে না পারে, তাহলে সেটি নিষিদ্ধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য হবে না।
৫. সামরিক মানের গুলি ছুঁড়তে সক্ষম যেকোনো অস্ত্র নিষিদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে গণ্য হবে।
৬. কোনো অস্ত্র যদি সরকারি বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্রের কমন স্পেয়ার পার্টস (অর্থাৎ একক অংশ) ব্যবহার করে, তবে তাও নিষিদ্ধের তালিকায় পড়বে।
৭. একবার ট্রিগার চাপলে একাধিক গুলি ছুঁড়ে— যেমন অটোমেটিক রাইফেল বা মেশিন গান—এমন আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ।
কী ধরনের অস্ত্র অনুমোদনযোগ্য
এই নিষিদ্ধ তালিকার বাইরে সাধারণত নন-প্রোহিবিটেড বোর (এনপিবি) অস্ত্র যেমন .২২ ক্যালিবার রাইফেল, ১২ বোর শটগান বা নির্দিষ্ট সীমার পিস্তল— সরকারের নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স নিয়ে ব্যবহারের সুযোগ থাকে। তবে তা শুধুমাত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি ও জেলা প্রশাসনের অনুমতির ভিত্তিতে।
লাইসেন্সের আবেদন ও সীমাবদ্ধতা
অস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণে আবেদনকারীকে অবশ্যই তার নিরাপত্তাজনিত প্রয়োজন, সামাজিক অবস্থান এবং সরকারের নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করতে হয়। জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আয়কর সংক্রান্ত কিছু বিধি শিথিল রয়েছে।
আরও পড়ুন—