হোম > জীবনধারা > ফিচার

সম্পর্ক শেষ হতে চলেছে! খোঁজ নিন সঙ্গীটি নার্সিসিস্ট কি না

ফিচার ডেস্ক

ছবি: পেক্সেলস

হয়তো আপনি খেয়াল করেননি। কিন্তু আপনার সঙ্গে দিনের পর দিন এসব ঘটে গেছে বলে আপনি সম্পর্কের শেষ চান। আবার আপনি ভেবেও পাচ্ছেন না, সব দোষ কেন আপনার ঘাড়েই আসছে! সম্পর্ক শেষ করার আগে একবার সচেতনভাবে খেয়াল করুন আপনার সঙ্গীটি নার্সিসিস্ট কি না।

নার্সিসিজম বা আত্মমগ্নতা একটি মানসিক অবস্থা। কিংবা একে বলা যেতে পারে ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য। এমন মানুষ নিশ্চয়ই দেখেছেন, যারা নিজের প্রশংসা শুনে খুশি হয়, নিজেকে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ মনে করে, অহংকারী ও দাম্ভিক আচরণ করে কিংবা যেকোনো ধরনের সমালোচনা সহ্য করতে অক্ষম। খেয়াল করলেই দেখবেন, আপনার চারপাশে এমন মানুষ আছে। নিজের সঙ্গীর দিকে তাকিয়ে দেখুন তো, তার মধ্যেও এসব সমস্যা আছে কি না।

যদি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মুখে থাকে, তাহলে একবার খোঁজ নিয়েই দেখুন, তার মধ্যে নার্সিসিজম আছে কি না। নারী-পুরুষ সবাই নার্সিসিস্ট হতে পারে। এমন মানুষেরা সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ঘটনা ঘটায়। খেয়াল করে দেখুন, আপনার জীবনের ঘটনার সঙ্গে সেগুলোর মিল আছে কি না।

ভিকটিম চরিত্রে অভিনয়

যখন নার্সিসিস্টরা বুঝতে পারে যে সম্পর্কটি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন তারা নিজেদের ভিকটিম হিসেবে তুলে ধরতে পারে। যা কিছু ভুল হয়েছে, তার জন্য সঙ্গীকে দোষারোপ করে ও নিজেকে নির্দোষ ভাবে। তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, অন্যায়টি তাদের সঙ্গেই হয়েছে। এটি মূলত মানুষের সহানুভূতি অর্জন ও সঙ্গীকে অপরাধবোধে ভোগানোর জন্য যথেষ্ট।

ছবি: পেক্সেলস

লাভ বম্বিং

সম্পর্কের শুরুতে নার্সিসিস্টরা তাদের সঙ্গীর ওপর ভালোবাসা ও অপার স্নেহ দেখায়। কিন্তু যখন তারা সম্পর্ক শেষ করতে চায়, তখন তাদের সমস্ত মমত্ববোধ উবে যায়। তারা সঙ্গীকে অবহেলা ও অবজ্ঞার পাত্র করে তুলতে নানান ঘটনার জন্ম দিতে পারে। সেসব ঘটনা নিজেরা তৈরি করলেও সবার সামনে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে ভুলগুলো তাদের নিজের নয়, বরং পাশের মানুষটির।

গ্যাসলাইটিং

নার্সিসিস্টরা তাদের সঙ্গীর বাস্তবতা সম্পর্কে সন্দেহ তৈরিতে পারদর্শী। সম্পর্ক টেকাতে না চাইলে তারা এই কৌশল আরও গভীরভাবে প্রয়োগ করে। ফলে যা ঘটেছে, তা সম্পর্কে সঙ্গীর মধ্যে বিভ্রান্তি ও আত্ম-সন্দেহ তৈরি হয়। এমন অবস্থায় নার্সিসিস্টরা আগের সব প্রতিজ্ঞা অস্বীকার করতে পারে। পাশাপাশি পুরো ঘটনা সবার সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করে যে তাদের সঙ্গীরা নিজের স্মৃতি ও বিচারবুদ্ধির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ক্ষেত্রবিশেষে অপরাধবোধে ভোগে। এই বিভ্রান্তিকর অবস্থা তৈরি করে তারা সম্পর্ক শেষ করে দেয় বা দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে।

নীরবে শায়েস্তা করা

নার্সিসিস্টরা সঙ্গীকে শাস্তি দেওয়ার বা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নীরবতাকেও কখনো কখনো ব্যবহার করে। সম্পর্কের ইতি টানতে তারা এই কৌশল ঘন ঘন ব্যবহার করতে পারে। ফলে সঙ্গী একদিকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করে এবং অন্যদিকে নার্সিসিস্ট ব্যক্তির জন্য আকুলতা বোধ করে। এই পরিস্থিতি নার্সিসিস্টরা চরমভাবে উপভোগ করে।

ছবি: পেক্সেলস

মানসিক চাপ সৃষ্টি করা

একজন নার্সিসিস্ট ব্যক্তিত্বের মানুষ সম্পর্কের সমাপ্তি চাইলে বিভিন্নভাবে সঙ্গীর ওপর মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে। তারা অপরাধবোধ, ভয় বা করুণার অনুভূতি ব্যবহার করে সঙ্গীকে হয়রানি করতে পারে বা নিজের কথা শুনতে বাধ্য করতে পারে।

স্মিয়ার ক্যাম্পেইন

এ ধরনের কিছু মানুষ তাদের বন্ধু, পরিবার বা সহকর্মীদের মধ্যে সঙ্গীর খ্যাতি নষ্ট করার জন্য মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করে থাকে। বেশির ভাগ সময়ই তারা সফল হয়। ফলে সঙ্গীর কাছের মানুষগুলো তার কাছ থেকে অনেক সময়ই দূরে সরে যায়।

সঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নার্সিসিস্টরা কখনো কখনো পরকীয়ায় জড়ায়

নার্সিসিস্টরা সঙ্গীর মধ্যে ঈর্ষা ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করার জন্য প্রয়োজন বুঝে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বা ঘনিষ্ঠ হয়। তারা বরাবরই সঙ্গীকে হাতে-কলমে বোঝাতে চায় যে তাদের মতো উপযুক্ত, ভালো বা সেরা সঙ্গী আর কেউই হতে পারে না। মানুষ হিসেবে তারা অনেক উন্নত। ফলে যে কেউই তাদের লুফে নিতে চাইবে। সঙ্গী যেন সব সময়ই তাকে গুরুত্ব দেয়, সে জন্যই মূলত তারা এটা করে থাকে।

ছবি: পেক্সেলস

হুভারিং

ব্রেকআপের পরে নার্সিসিস্টরা অনেক সময় ‘হুভারিংয়ে’ জড়ায়। যেখানে তারা সঙ্গীকে সম্পর্কের মধ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। তারা সঙ্গীকে মেসেজে আন্তরিক বার্তা পাঠাতে পারে, পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিতে পারে, এমনকি অনেক সময় সঙ্গীকে স্টক করে যখন-তখন সরাসরি উপস্থিত হয়ে নিজের অপারগতা প্রকাশ করতে পারে।

নার্সিসিস্টরা কখনো সমস্যার সমাধান করে না

নার্সিসিস্টরা সম্পর্ক শেষ করতে চাইলে নানান সমস্যা তৈরি করতে পারে। কিন্তু কোনো সমস্যারই সমাধান করে না। সঙ্গী মিটমাট করতে চাইলেও তারা নিজেদের দিক থেকে নাকচ করে দেয়। এই আচরণ সঙ্গীকে মানসিকভাবে অস্থির করে তুলতে পারে এবং নিজ থেকে সম্পর্কের শেষ দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে।

সতর্কতা ও চিকিৎসা

তবে অন্যকে নার্সিসিস্ট ভাবার আগে নিজেকে সতর্ক থাকতে হবে। নিজের ভেতর সে সমস্যা আছে কি না, সেটাও যাচাই করে দেখা জরুরি। নার্সিসিজমের চিকিৎসা আছে। সে জন্য একজন অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাউন্সেলিং নেওয়া যেতে পারে।

সূত্র: রিলেশনশিপ রুলস

ফুলে ফুলে রঙিন হোক বারান্দা

জেনে নিন, স্থায়ীভাবে কোন জায়গাগুলোর ওপর দিয়ে বিমান চলে না

ডিজনির রাজকুমারীরা: রূপকথার হাত ধরে প্রজন্মের শিক্ষা

হাওয়া বদল: সুস্থ থাকার ম্যাজিক দাওয়াই কি হারিয়ে গেল?

বিয়ে করলে নাগরিকত্ব পাবেন যেসব দেশের

ডলারের জন্ম যে শহরে

মন শান্ত রাখে ইনডোর প্ল্যান্ট

রুক্ষতা থেকে চুলকে বাঁচাবেন যেভাবে

বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ‘রাষ্ট্রপ্রধান’ ড্যানিয়েল জ্যাকসনের দেশের নাম কী?

পাসপোর্টের ইতিকথা: লাল, নীল কিংবা সবুজ বইটি যেভাবে এল