শাড়ি পরতে ভালোবাসেন। অথচ মায়ের সাহায্য ছাড়া তা হয়ে ওঠে কঠিন! ধরুন, উৎসবের দিন, মা-বোন সবাই ভীষণ ব্যস্ত। সহায়তা পাওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই; বরং তাতে দেরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে রকম সময় কি শখ করে কিনে আনা সুন্দর শাড়িটা পরা হবে না? এত এত ভাঁজ, পিন, কুঁচি এবং লম্বা কাপড় দেখে মনে হতে পারে, ‘কোথা থেকে শুরু করব?’ কিন্তু হ্যাঁ, একবার যদি শাড়ি পরার কৌশল রপ্ত করতে পারেন, দেখবেন সেটি মোটেও কঠিন নয়। শুরুতে সবকিছু নিখুঁতভাবে হতে হবে, তেমনটাও নয়। শুধু ধাপগুলো অনুসরণ করুন। পরে ফেলতে পারবেন যেকোনো শাড়ি। তারপরই না জমিয়ে দিতে পারবেন উৎসবের আসর।
প্রস্তুতি নিন
উৎসবের দিন যে শাড়িটা পরবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন, সেটা তো বটেই; সঙ্গে শাড়ি পরতে আনুষঙ্গিক যা প্রয়োজন, সবকিছুই হাতের কাছে গুছিয়ে রাখুন। পরে যেন মাঝপথে তাড়াহুড়ো করতে না হয়। ছোট্ট এই ফর্দ মেনে চলতে পারেন—
ধাপ ১
প্রথমে ব্লাউজ ও পেটিকোট পরে নিন। পেটিকোট এমনভাবে বাঁধুন, যেন তা শাড়িকে ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট আঁটসাঁট হয়; তবে অস্বস্তিতে যেন না ফেলে।
ধাপ ২
শাড়ির যে অংশটিতে কোনো ডিজাইন নেই, সেই প্রান্ত নিন। আপনার নাভির ডান দিকে একটু দূরে পেটিকোটের ভেতরে গুঁজে দিন। এখান থেকেই শুরু। এবার, একবার আপনার কোমরের চারপাশে এটি জড়িয়ে নিন। কাপড় যাতে কুঁচকে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন এবং হাত দিয়ে সমান করে নিন। এটি নিখুঁত না হলেও চলবে, শুধু শক্তভাবে গুঁজে দিন। শাড়ির নিচের দিকটি সবদিকে সমান আছে কি না, তা দেখুন। কাপড়ে কোথাও ভাঁজ থাকলে হাত দিয়ে ঠিক করে নিন।
ধাপ ৩
কুঁচি ভাঁজ করা কাপড় ছাড়া আর কিছুই নয়। সামনের দিকে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি কাপড় নিয়ে সমান ভাঁজ করতে থাকুন। সাধারণত ৬টি বা ৭টি কুঁচি দেখতে ভালো লাগে। এ ছাড়া আপনার যদি কম বা বেশি প্রয়োজন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
শাড়ি সুন্দরভাবে পরার জন্য সঠিক মাপের একটা ফিটেড পেটিকোট বেছে নিতে হবে। শাড়ি পরার আগেই জুতা জোড়া পরে নিন, এরপর শাড়ি পরুন। তবে শাড়ির আসল সৌন্দর্য কুঁচিতে। সেগুলো যেন ছোট-বড় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখলেই হলো।
অনিক কুণ্ডু, সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ডিজাইনার, হরিতকী
সব কটি কুঁচি একসঙ্গে ধরে নিচের কিনারাগুলো সমান করুন এবং নাভির ঠিক বাঁ দিকে পেটিকোটের ভেতরে হালকা করে গুঁজে দিন। এরপর ভেতরের দিক থেকে একটি পিন লাগিয়ে দিন, যাতে কুঁচিগুলো এলোমেলো হয়ে না যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, পিনটি যেন বাইরে থেকে দেখা না যায়।
ধাপ ৪
এবার শাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটি পরার পালা। তা হলো শাড়ির আঁচল। লম্বা এই অংশ ডান থেকে বাঁ দিকে আপনার শরীরের ওপর দিয়ে নিয়ে আসুন। এটি আপনার বাঁ কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনের দিকে ফেলুন। আপনি এটি কতটা লম্বা রাখতে চান, সেটি নিজস্ব পছন্দের ওপর নির্ভর করবে।
আঁচলটি যাতে জায়গামতো থাকে, সে জন্য একটি সেফটিপিন দিয়ে ব্লাউজের সঙ্গে আটকে নিন।
ধাপ ৫
শাড়ি পরার পর সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, তা আরেকবার দেখে নিন। কোমর ও নিচের দিকটা হাত দিয়ে সমান করে নিন। বিভিন্ন দিক থেকে আয়নায় দেখুন। কুঁচিগুলো কি সোজা আছে? আঁচল কি সুন্দরভাবে পড়ছে? যদি কিছু ভুল মনে হয়, সেগুলো ঠিক করে নিন।
এবার আপনার পছন্দমতো গয়না পরুন। যেমন চুড়ি, দুল ও গলায় মালা কিংবা নেকলেস। শাড়ি পরা নিখুঁত হওয়ার বিষয় নয়, এটি আত্মবিশ্বাস ও আনন্দের সঙ্গে পরার বিষয়। আপনি যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান, সেভাবেই গুছিয়ে নিলেই হলো।