হোম > জীবনধারা > সাজসজ্জা

ভালোবাসায় জড়িয়ে থাক জামদানি

রজত কান্তি রায়, ঢাকা  

ভালোবাসার অন্য নাম জামদানি—এটা না বললেও চলে এ দেশের মানুষকে। এই এক বস্ত্র নিয়ে কত আলোচনা, কত লেখালেখি আর তর্কবিতর্ক, তার কোনো হিসাব নেই। আসছে ভালোবাসা দিবসে তাই অঙ্গে জড়িয়ে থাক জামদানি।

শক্তির যেমন ক্ষয় নেই, শিল্প হিসেবে জামদানিও তেমনি অক্ষয়। কারণ, জামদানি এখন শাড়িতে সীমাবদ্ধ নেই। সেটি তো আছেই। জামদানি কাপড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে নারী-পুরুষের পোশাক এবং হোম ডেকর। এগুলোর মধ্যে আছে স্কার্ফ, কামিজ, কটি, পাঞ্জাবি, ওড়না, কুশন কভার কিংবা জানালার পর্দা। নোটবুকের কভারে এর ব্যবহার এখন মনকাড়া। অবাক হওয়ার মতো ঘটনা বটে, জামদানি কাপড় দিয়ে এখন তৈরি হচ্ছে জুতা। এ তো গেল সরাসরি জামদানি কাপড়ের ব্যবহার। এর মোটিফ দিয়ে টাঙ্গাইলে তৈরি হয় এক বিশেষ ধরনের সুতি শাড়ি, যার নাম টাঙ্গাইলা জামদানি। শুধু মোটিফ ব্যবহারের কারণে দেওয়া এই নাম অনেককে ধন্দে ফেলে। আর সে কারণে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে জামদানির প্রভাব প্রায় সর্বব্যাপী।

জামদানির পোশাক

বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ফ্যাশন হাউসগুলো এনেছে বিভিন্ন পোশাক। কয়েক বছর ধরে এমন উৎসবকেন্দ্রিক পোশাকে দেখা যাচ্ছে জামদানি কাপড় এবং এর নকশার ব্যবহার। কিছু প্রতিষ্ঠান এখন জামদানি দিয়ে তৈরি করছে লং কটি, কামিজ, ওড়না, ব্লাউজ, ছেলেদের কটি, পাঞ্জাবি। এসব পোশাকে ব্যবহার করা হচ্ছে উজ্জ্বল রং। এগুলোর মধ্যে লাল ও নীল উল্লেখযোগ্য। এসব রং যেমন ভালোবাসা প্রকাশে ব্যবহার করা হয়, তেমনি এসব উজ্জ্বল রং বসন্তের সঙ্গেও যুক্ত। আদিতে জামদানি কাপড়ে কোনো রং ছিল না। সেটি ছিল মূলত সাদা রঙের সুতার ওপর সাদা কিংবা এর বিভিন্ন স্তরের রঙের সুতার খেলা। এই সাদার ওপর সাদা রঙের জামদানি শাড়ি এবং অন্যান্য পোশাকও চাইলে এখন বানিয়ে নেওয়া যায়।

জামদানি শাড়ির একটা দারুণ দিক আছে, সেটি হলো বাজার বা ফ্যাশন হাউসগুলোর আউটলেটে তো কিনতে পাবেনই; চাইলে পছন্দের রং ও নকশার জামদানি বানিয়ে নেওয়া যায়। ভালোবাসা দিবস সামনে রেখে তা-ও করতে পারেন।

জামদানি দিয়ে পোশাক তৈরি করেন নাজিয়া বিনতে হারুন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘অবনি’। নাজিয়া জানান, তাঁদের তৈরি পোশাকের মধ্যে জামদানি কটির দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা।

এ ছাড়া জামদানি টু-পিসের দাম ৪ হাজার ২০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। থ্রি-পিস ৬ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। এ ছাড়া পুরুষদের জামদানি কটি পাওয়া যায় ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকায়।

পোশাক ও ছবি: অবনি

উপহারসামগ্রী ও অন্যান্য

জামদানি দিয়ে সরাসরি পোশাক নয়। এখন কাঠ বা বোর্ডে তৈরি আসবাব, উপহারসামগ্রী, শোপিসের নকশায়ও ব্যবহৃত হচ্ছে জামদানি কাপড় এবং কখনো কখনো এর মোটিফ। মূলত এর বহুল পরিচিত মোটিফগুলো ব্যবহার করা হয় এসব তৈরিতে।

নোটবুক, নকশি আয়নাসহ বিভিন্ন উপহারসামগ্রী তৈরিতে বেশ জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ‘যথাশিল্প’। প্রতিষ্ঠানটির আইকনিক পণ্য জামদানি নোটবুক। দেশে নয়, বিদেশেও যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানের নোটবুক। যথাশিল্প নোটবুকের পাশাপাশি তৈরি করে জামদানি ফাইল ফোল্ডার। নকশি আয়নার কভারের নকশাতেও ব্যবহার করা হয় জামদানি মোটিফ। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করে জামদানি স্কার্ফ, টেবিল রানার এবং জানালার পর্দা। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাওন আকন্দ জানান, জামদানির বৈচিত্র্যময় পণ্য তরুণদের ভালো লাগছে। তাঁরা জামদানি নোটবুকসহ অন্যান্য পণ্য কিনছেন যথাশিল্পের আউটলেট এবং অনলাইন থেকে।

নোটবুক ও ফাইল ফোল্ডার: যথাশিল্প

যথাশিল্পের জামদানি নোটবুকের দাম (পকেট সাইজ) ৩৮০ থেকে ১ হাজার ১৮০ টাকা। এ ছাড়া সিঙ্গেল পিস জামদানি স্কার্ফের দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা।

এ দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অনলাইন ও অফলাইনে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান জামদানি দিয়ে তৈরি করা বৈচিত্র্যময় পণ্য বিক্রি করে। একটু খুঁজলেই মিলে যাবে সেসব পণ্য।

জামদানি আমাদের গর্বের ও ভালোবাসার ঐতিহ্য। এই ভালোবাসা দিবসে জামদানি জড়িয়ে থাক আমাদের, আমরা জড়িয়ে থাকি জামদানির বৈচিত্র্যময় পণ্যে।

উৎসবে ঘরের আবহ বদলে দেবে আলোর ব্যবহার

আপনার প্রিয় সাজের সামগ্রী কত দিন নিরাপদ

ফুরিয়ে আসা লিপস্টিকে নতুন প্রসাধনী

ফিরে ফিরে আসে ষাটের দশকের মেকআপ

রাশি মেনে লিপস্টিক পরছেন তো?

এই শীতে চুলের সেরা ৫ রং

দশমীতে ধুতি-পাঞ্জাবির মেলবন্ধন

আটপৌরে লাল-সাদায় পূজার আনন্দসাজ

‘শাড়ির পোকা’ স্বস্তিকার মতো পূজায় সাজুন শাড়িতে

৫ ধাপে শাড়ি পরা সহজ হবে উৎসবে