হোম > ইসলাম

স্বাধীনতার পর যেভাবে চালু হয় হজযাত্রা

ইসলাম ডেস্ক

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হজযাত্রা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। সৌদি আরব বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় বাংলাদেশি পরিচয়ে হজে যাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশিদের ভারতের পাসপোর্ট নিয়ে হজে যেতে হয়েছিল। ভারতীয় মুহাম্মদী জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে হজযাত্রী পরিবহন করা হতো তখন। অন্যদিকে লটারির মাধ্যমে ৩ হাজার হজযাত্রী বাছাই করে বিমানযোগে ঢাকা থেকে পাঠানো হয়।

মুহাম্মদী জাহাজ বেশ পুরোনো ও দুর্বল হওয়ায় তা সমুদ্রপথে যাতায়াতের উপযোগী ছিল না। সে জন্য সেটি বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু ‘হিজবুল বাহার’ নামে আরেকটি জাহাজ কেনার ব্যবস্থা করেন। এ প্রসঙ্গে ‘পবিত্র হজ কার্যক্রম-২০২৩’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। কম খরচে হজ পালনের জন্য তিনি “হিজবুল বাহার” জাহাজ কেনেন এবং বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠান।’

 ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু সৌদি বাদশাহ ফয়সালের কাছে একটি তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মুসলমানদের হজ পালনের অনুমতি চাওয়া হয় সেই তারবার্তায়। এটি তৎকালীন বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই ধর্মভীরু মুসলমান এবং তাহারা কঠোরভাবে ইসলামের অনুশাসন পালন করিয়া থাকে। ভিসা মঞ্জুর করার জন্য আপনার সরকার যদি কোনো অফিসার প্রেরণ করিতে চান, তাহা হইলে তাহাকে সাদরে গ্রহণ করা হইবে এবং সকল সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হইবে।’

 ১৯৭৩ সালে আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ায় আয়োজিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগ দেন বঙ্গবন্ধু। তখনো পাকিস্তান ও চীনের পাশাপাশি সৌদি আরব ও লিবিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। আলজিয়ার্সে পৌঁছে তিনি কর্নেল গাদ্দাফি ও সৌদি বাদশাহ ফয়সালের সঙ্গে বৈঠক করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু এই বৈঠক আয়োজন করা খুব একটা সহজ ছিল না। সাংবাদিক এম আর আখতার মুকুল লিখেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের সফরসঙ্গী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের অক্লান্ত চেষ্টায় আলজিয়ার্সে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সফরসঙ্গী ছিলেন সাংবাদিক এম আর আখতার মুকুল। তাঁর লেখা ‘মুজিবের রক্ত লাল’ বইয়ে তিনি শেখ মুজিবুর রহমান ও বাদশাহ ফয়সালের মধ্যে বৈঠকের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। শেখ মুজিব জানতে চান, ইন্দোনেশিয়ার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ হলেও সৌদি আরব কেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না? স্বীকৃতি পেতে সৌদি বাদশাহ শেখ মুজিবকে দুটি শর্ত দেন। একটি হচ্ছে, বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ রাখা এবং অন্যটি হচ্ছে, অবিলম্বে সব পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীকে ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু এসব ব্যাপারে শেখ মুজিব একমত হতে পারেননি।

এম আর আখতার মুকুল বঙ্গবন্ধুর কথা উদ্ধৃত করে বলেন, ‘প্রায় দুই বছর পর্যন্ত সৌদি আরব স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় সেখানকার পরহেজগার মুসলমানরা যে পবিত্র হজ আদায় করতে পারছেন না, সে কথা ভেবে দেখেছেন কি এক্সেলেন্সি? এভাবে বাধার সৃষ্টি করা কি জায়েজ হচ্ছে? পবিত্র কাবা শরিফে তো দুনিয়ার সমস্ত দেশের মুসলমানদের নামাজ আদায়ের হক রয়েছে। কেন আজ হাজার হাজার বাঙালি পরহেজগার মুসলমানকে ভারতের পাসপোর্টে পবিত্র হজ পালন করতে হচ্ছে?’

সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাদশাহ ফয়সালের একটি ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, এই বৈঠকের পর বাংলাদেশিরা হজ পালনের অনুমতি পান। 

সূত্র: বিবিসি বাংলা ও অন্যান্য

জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা: মুমিনের করণীয়

মসজিদগুলো হয়ে উঠুক শিশুবান্ধব

ফুটপাতে পথশিশুদের হিমশীতল রাত

ফরজ গোসলের সময় নারীদের চুল ধোয়ার বিধান

শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামার হারিয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

দাওয়াতুল হকের মারকাজি ইজতেমা শনিবার

একের পর এক ভূমিকম্প মুমিনকে যে সতর্কবার্তা দিয়ে যাচ্ছে

স্ত্রীর সঙ্গে ভালোবাসার গভীরতা বাড়াবে যে সুন্নাহ

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫