হোম > ইসলাম

সারাক্ষণ প্রস্রাব হয়—এমন ব্যক্তি নামাজ পড়বেন যেভাবে

মুফতি হাসান আরিফ

জায়নামাজ। ছবি: সংগৃহীত

নামাজ ইসলামের অন্যতম রোকন, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মুসলমানদের ওপর প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। কখনো কেউ অসুস্থ হয়ে গেলেও নামাজ আদায় করতে হবে। তবে অসুস্থতার কারণে আদায়ের ধরনে ভিন্নতা আসতে পারে।

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করো, যদি তা না পারো তবে বসে আদায় করো, যদি তা-ও না পারো, তবে ইশারায় নামাজ আদায় করো। (সহিহ্ বুখারি: ১০৫০)। এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, অসুস্থ অবস্থায়ও নামাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

নামাজ আদায়ের জন্য পবিত্রতা অর্জন আবশ্যক। বলা যায়—পবিত্রতা হচ্ছে নামাজের চাবি। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের চাবি নামাজ। আর নামাজের চাবি হচ্ছে অজু।’ (জামে তিরমিজি: ৪)।

কিন্তু লাগাতার প্রস্রাব বের হওয়ার মতো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ মানুষের মতো অজু ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাদের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা কী?

সারাক্ষণ প্রস্রাব ঝরে এমন ব্যক্তির অজু ও নামাজের বিধান

কারও যদি সারাক্ষণই অল্প অল্প করে প্রস্রাব বের হতে থাকে এবং এতটুকু সময়ও না পায়—যার মাঝে ফরজ নামাজটুকু আদায় করা নেবেন, তাহলে এমন অসুস্থ ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য নতুন করে অজু করে নেবেন। একবার অজু করলে ওই নামাজের ওয়াক্ত যতক্ষণ থাকবে—অজু ভঙ্গের অন্য কোনো কারণ পাওয়া না গেলে এই অজু দিয়ে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত এবং নফল নামাজ যত রাকাত ইচ্ছা আদায় করে নিতে পারবেন। হাতে ধরে পবিত্র কোরআনও তিলাওয়াত করতে পারবেন।

ওয়াক্ত শেষ হলে এবং পরবর্তী নামাজের ওয়াক্ত হলে অজু ভেঙে যাবে। পরবর্তী ওয়াক্তের জন্য নতুন করে অজু করে নিতে হবে। তবে এ সময় অজু ভঙ্গের অন্য কোনো কারণ পাওয়া গেলে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগেই অজু নষ্ট হয়ে যাবে।

আর এমন অসুস্থ ব্যক্তি সম্ভব হলে পবিত্র কাপড় পরে নামাজ আদায় করবেন। সম্ভব না হলে ওই কাপড়েই নামাজ আদায় করবেন। তবে অন্তর্বাস বা টিস্যু দিয়ে প্রস্রাব ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবেন।

এক নারী সাহাবি এসে নবী করিম (সা.)-কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার রক্তস্রাব হতেই থাকে এবং আমি কখনো পবিত্র হতে পারি না। আমি কি নামাজ ছেড়ে দেব?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘না, এটা এক ধরনের শিরাজনিত রোগ, এটা ঋতুস্রাবের রক্ত নয়। তুমি তোমার ঋতুস্রাবের মেয়াদকাল নামাজ থেকে বিরত থাকো, আর যখন তা বন্ধ হয়ে যাবে, তখন রক্ত ধুয়ে ফেলবে, তারপর নামাজ আদায় করবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২২৮)

ইউরিন ক্যাথেটার পরা অবস্থায় নামাজের বিধান

রোগের কারণে কোনো কোনো রোগীর প্রস্রাবের রাস্তার সঙ্গে ক্যাথেটার (এক প্রকার নল) লাগিয়ে প্রস্রাবের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ফলে তা দিয়ে সর্বক্ষণ প্রস্রাব ঝরতে থাকে।

এমন ব্যক্তির নামাজের বিধান হলো—ক্যাথেটার লাগানোর পর থেকে ওয়াক্তের শেষ পর্যন্ত তা লাগানো থাকলে ওই ব্যক্তি শরিয়তের পরিভাষায় অক্ষম বলে গণ্য হবে। তাই সারাক্ষণ প্রস্রাব নির্গত হওয়া ব্যক্তির জন্য যেভাবে নামাজের আদায়ের বর্ণনা ওপরে দেওয়া হয়েছে—সেভাবেই তিনি নামাজ আদায় করবেন।

প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য নতুন করে অজু করে নেবেন। একবার অজু করলে ওই নামাজের ওয়াক্ত যতক্ষণ থাকবে—অজু ভঙ্গের অন্য কোনো কারণ পাওয়া না গেলে এই অজু ভাঙবে না।

তথ্যসূত্র: মাবসুত, সারাখসি: ২ / ১৩৯, দুররুল মুখতার: ১ / ৩০৫, রদ্দুর মুহতার: ১ / ৫০৪-৫০৫, মারাকিল ফালাহ: ৮০-৮১, বাদায়েউস সানায়ে: ১ / ১২৬, বাহরুর রায়েক: ১ / ৩৭৩

রমজানের প্রস্তুতি শুরু হোক রজব মাস থেকেই

নতুন বছরে মুমিনের আত্মসমালোচনা

দক্ষিণ ভারতের প্রাচীনতম ৩ মসজিদ

মুসলিম নারীর সৌন্দর্যচর্চায় হালাল নেলপলিশ

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

তারেক রহমানের পোস্টে সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত

সফর শেষে নিজ দেশে ফিরে যে আমল করতেন নবীজি

অতিথিকে যেভাবে সম্মান করতে বলেছেন নবীজি (সা.)

যেসব দোয়ায় রয়েছে পরকালীন মুক্তি ও অসামান্য সওয়াব

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫