এতিমের লালন-পালন, এতিমের প্রতি সহানুভূতি, দয়া ও ভালো আচরণ এবং তাদের হক রক্ষায় জোর তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। এতিম বলে কেউ কেউ তাদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করে। কিন্তু আল্লাহ তাদের প্রতি কঠোর হতে নিষেধ করেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘অতএব এতিমের প্রতি তুমি কঠোর হইও না।’ (সুরা দুহা: ১০)
এতিম সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, নিজ সন্তানের মতো দেখা মহৎ হৃদয়ের পরিচায়ক। এতিম সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাদের মধ্যে নিজের সম্পদ সংরক্ষণের জ্ঞানবুদ্ধি হয়েছে কি না, তা যাচাই করবে। সম্পদ হস্তান্তরের যোগ্য মনে হলে ওয়ারিশ সূত্রে বা অন্য কোনো উপায়ে প্রাপ্ত সম্পদ তাদের কাছে হস্তান্তর করে দেবে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগ পর্যন্ত তার সম্পদ কুক্ষিগত করে না রেখে তা বৈধ পন্থায় বৃদ্ধির চেষ্টা করবে। এতিম শিশু বড় হলে সম্পদ হাতছাড়া হয়ে যাবে, এ ভয়ে তাদের মাল অপচয় ও তাড়াহুড়ো করে খরচ মারাত্মক অন্যায়। অবশ্য এতিমের দায়িত্বশীল অসচ্ছল হলে প্রয়োজন অনুপাতে খরচ করতে পারবে। এটা হবে তার পারিশ্রমিক। ভরণপোষণকারী ধনী হলে তার জন্য এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা জায়েজ নেই।
এতসব নিষেধাজ্ঞার পরও যারা এতিম সন্তানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, তারা মূলত এতিমের সম্পদ নয় বরং নিজেদের পেটে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করায়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই যারা এতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভরে এবং তারা শিগগির প্রবেশ করবে জ্বলন্ত আগুনে।’ (সুরা নিসা: ১০)
কোরআন ও হাদিসের বিধিনিষেধ পুরোপুরি মেনে যারা সঠিকভাবে এতিমের দেখভাল ও লালন-পালন করবে, তারা দুনিয়ায় তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালনে সফল। পরকালে তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার। নবী (সা.) বলেন, ‘আমি এবং এতিমের ভরণপোষণকারী বেহেশতে এই দুটি মধ্যমা ও তর্জনী আঙুলের মতো একত্রে থাকব।’ (আদাবুল মুফরাদ: ১৩২)