একমাত্র ইবাদতের জন্যই আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তবে সেই ইবাদতের আছে নির্দিষ্ট নিয়মনীতি। নিয়ম মেনেই আমাদের ইবাদত করতে হবে। নিজের মনমতো কিছু করলেই তা ইবাদত হবে না, বরং কিছু ক্ষেত্রে গুনাহের আশঙ্কা থাকে। যেকোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো নিয়ত। অর্থাৎ, বিশুদ্ধ নিয়তে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদত করা। অন্য কাউকে খুশি করা বা লোকদেখানো ইবাদত না করা।
এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তাদের শুধু একনিষ্ঠভাবে বিশুদ্ধ চিত্তে আল্লাহর ইবাদতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ (সুরা বাইয়িনা: ৫)। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আপনি বলে দিন, তোমাদের অন্তরের বিষয় গোপন করো বা প্রকাশ করো—আল্লাহ সবকিছু জানেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ২৯)। এই আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যায়, কার মনে কী আছে, কে কোন নিয়তে ইবাদত করছেন, আল্লাহ সব জানেন। সে অনুযায়ী তিনি বান্দাকে প্রতিদান দেবেন। বান্দার নিয়ত শুদ্ধ হলে সওয়াব দেবেন, জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; আর নিয়ত খারাপ হলে ইবাদত বিফলে যাবে।
নিয়ত নিয়ে হাদিসে চমৎকার একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। নিয়তের বিষয়টা তাতে সুন্দরভাবে বোঝা যায়। হজরত মান ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বলেন, ‘আমার বাবা ইয়াজিদ একবার কিছু দিনার নিয়ে মসজিদে এক ব্যক্তির কাছে দিয়ে এলেন, যেন তিনি তা সদকা করে দেন। তখন আমি গিয়ে তাঁর থেকে তা (সদকা হিসেবে) নিয়ে বাসায় চলে এলাম। আমার বাবা দেখে বললেন, ‘‘আল্লাহর কসম, আমি তো তোমাকে দেওয়ার ইচ্ছা করিনি।’’ আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বিষয়টির সমাধান করে দেওয়ার আবেদন করলাম। তিনি আমার বাবাকে বললেন, ‘‘ইয়াজিদ, তুমি যা নিয়ত করেছ, তার সওয়াব পেয়ে গেছ।’’ আর আমাকে বললেন, ‘‘তুমি যে দিনার নিয়েছ, সেটা তোমারই থেকে যাবে।’’’ (সহিহ্ বুখারি: ১৪২২)
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক