হিজরি সনের অষ্টম মাস শাবান। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাস মহিমান্বিত রমজানের ভূমিকাস্বরূপ। বুদ্ধিমানরা এ মাস থেকেই রমজানের মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। নবী (সা.) শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।
উম্মুল মুমিনিন উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) প্রায় পুরো শাবান মাসই রোজা রাখতেন। বরং বলতে গেলে পুরোটাই রাখতেন। (নাসায়ি: ৪ / ১৯৯)
তবে বিশুদ্ধ মতামত হলো, তিনি পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন না। দু-একটি বাদ দিতেন। হজরত আয়েশা (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে পূর্ণ রোজা রেখেছেন বলে আমার জানা নেই।’ (মুসলিম: ১১৫৬)
অন্য কোনো মাসের তারিখ হিসাব করার ব্যাপারে নবী (সা.) কখনো জোরালো নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা যায় না। তবে বিশেষভাবে শাবান মাসের তারিখ হিসাব করতে তিনি সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের উদ্দেশে শাবান মাসের তারিখ গণনা করো।’ (তিরমিজি: ৬৮৭)
রাসুল (সা.) রমজানের বাইরে শাবান মাসে এতটা যত্নসহকারে ইবাদত পালনে মনোযোগী হতেন, যেমনটা অন্য কোনো মাসে পরিলক্ষিত হতো না। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) শাবান মাসের যেভাবে যত্ন নিতেন, অন্য কোনো মাসে সেভাবে যত্ন নিতেন না।
(এর অর্থ এটা নয় যে নবীজি অন্য মাসে অলসতা করতেন। বরং বলার উদ্দেশ্য, এ মাসের সক্রিয়তা আলাদা করে চোখে পড়ত।) এরপর রমজানের চাঁদ দেখলে রোজা রাখা শুরু করতেন। কোনো কারণে আকাশ মেঘযুক্ত হলে, তবে শাবান মাসের গণনা ৩০ দিন পূর্ণ করতেন। এরপর রোজা রাখতেন। (আবু দাউদ: ২৩২৫)
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক