জিলকদ চান্দ্রবর্ষের একাদশ মাস। হজের পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণের মাস। আরব সংস্কৃতি অনুযায়ী স্থানীয়রা এই মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত থাকত এবং বিশ্রামে সময় অতিবাহিত করত—এসব কারণেই এই মাসের নাম জিলকদ। (লিসানুল আরব) এ মাসে বিশেষ কোনো আমল না থাকলেও রয়েছে বিশেষ কিছু মর্যাদাপূর্ণ বিষয়।
এক. মর্যাদাপূর্ণ মাস: মর্যাদাপূর্ণ মাসগুলোর অন্যতম জিলকদ মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহ তাআলার বিধান ও গণনা অনুযায়ী (আরবি) মাসের সংখ্যা ১২টি, এর মধ্যে ৪টি মাস (রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররম) মর্যাদাপূর্ণ। এটাই সহজ-সরল দ্বীন। সুতরাং তোমরা এ মাসগুলোয় নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।’ (সুরা তাওবা: ৩৬) উল্লিখিত আয়াতে মর্যাদাপূর্ণ মাসে তুলনামূলক বেশি ইবাদত করা ও গুনাহ পরিহারের মাধ্যমে নিজেকে জুলুম থেকে বিরত রাখারও ইঙ্গিত করা হয়েছে। (তাওজিহুল কোরআন)
দুই. তুর পাহাড়ে মূসা (আ.)-এর অবস্থান: তাওরাত নাজিলের আগে হজরত মূসা (আ.) তুর পাহাড়ে চল্লিশ রাত অবস্থান করেছিলেন।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্মরণ করো, মূসার জন্য আমি ত্রিশ রাত নির্ধারণ করি এবং আরও দশ দিয়ে তা পূর্ণ করি। এভাবেই তার প্রতিপালকের নির্ধারিত সময় চল্লিশ রাতে পূর্ণ হয়।’ (সুরা আরাফ: ১৪২) ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘অধিকাংশ মুফাসসিরের মতানুসারে প্রথম ত্রিশ দিন ছিল জিলকদ মাস। আর বাকি দশ দিন ছিল জিলহজের প্রথম দশক।’ (ইবনে কাসির: ৩ / ৪২১)
তিন. অধিক পরিমাণে ওমরাহ পালন: এ মাসে রাসুল (সা.) সব থেকে বেশি ওমরাহ পালন করেছেন। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) তাঁর জীবদ্দশায় চারবার ওমরাহ পালন করেছেন, তার তিনটিই জিলকদ মাসে, আরেকটা হজের সঙ্গে জিলহজ মাসে।’ (মুসলিম: ১২৫৩)
লেখক: শিক্ষক, জামেয়াতুস সুন্নাহ, ঝিনাইদহ