মানুষ মানুষের জন্য। একজনের বিপদে আরেকজন এগিয়ে আসা মানবতার পরিচয়। অসুস্থতা, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে কখনো কারও রক্তের প্রয়োজন হয়। মানবতার জায়গা থেকে তখন এগিয়ে আসে অনেকে। একজনের সহযোগিতায় আরেকজনের বিপদ দূর হয়। এটিই সমাজের সৌন্দর্য।
অনেকের মনেই প্রশ্ন, ‘অজু অবস্থায় কাউকে রক্ত দিলে কি অজু ভেঙে যাবে, আবার অজু করে নামাজ পড়তে হবে?’ এ প্রশ্নের উত্তর জানতে কোন কোন কারণে অজু ভাঙে—তা আগে জেনে নিলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।
অজু ভেঙে যায় যে ৭ কারণে: ১. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে। ২. নামাজে উচ্চস্বরে হাসলে। ৩. মুখ ভরে বমি করলে। ৪. থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হলে। ৫. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুমালে। ৬. কিছু সময়ের জন্য বেহুঁশ বা উন্মাদ হলে। ৭. শরীরের যেকোনো জায়গা থেকে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
সুতরাং অজু ভাঙার কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো, শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। কাউকে রক্ত দেওয়ার সময় যে পরিমাণ রক্ত বের হয়—তা নিঃসন্দেহে গড়িয়ে পড়ার সর্বনিম্ন পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি। তাই কেউ রক্ত দিলে তার অজু ভেঙে যাবে। (আহসানুল ফাতাওয়া: ২/২৭, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ৫/৭০)
রক্তদান করলে যে সওয়াব: কারও জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আর তা যদি হয়, রক্তদানের মতো মহান কাজ, তাহলে তো কথাই নেই! আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যে কারও জীবন বাঁচাল, সে যেন তামাম মানুষকে বাঁচাল।’ (সুরা মায়িদা: ৩২)। নবীজি (সা.) বলেন, মানুষ যতক্ষণ অন্য মানুষের সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকে, আল্লাহ ততক্ষণ তার সহযোগিতা করতে থাকেন। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৭৪৬)। তিনি আরও বলেন, যে অন্যের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৯৩)