ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি নারী সেনা আগাম বার্গারকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলি আগাম বার্গারকে গাজার ভেতরে ইসরায়েলি সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিনিময়ে আজ ১১০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে—জাবালিয়ার একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়ি থেকে বেরিয়ে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বার্গারকে।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় বন্দী-বিনিময়ের প্রথম ধাপের তৃতীয় দফায় বার্গারকে মুক্তি দেওয়া হলো। এই দফায় আরও ২ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েল ১১০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে।
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-ক্বাসাম ব্রিগেড জাবালিয়ায় একটি বিধ্বস্ত বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বার্গারকে আইসিআরসির হাতে তুলে দেয়। পরে তাঁকে নেৎজারিম করিডরে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের সামরিক মুখপাত্র আবু হামজা নিশ্চিত করেন যে, গাদী মোসেস ও আরবেল ইয়াহুদ নামে দুই ইসরায়েলি বন্দীর হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, এই দুই বন্দীও আজ মুক্তি পাবেন।
এদিকে, ফিলিস্তিনি বন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি (পিপিএস) জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার তিন ইসরায়েলি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ১১০ ফিলিস্তিনি বন্দী ও আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেবে। পিপিএসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩২ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত, ৪৮ জন বিভিন্ন মেয়াদের সাজাপ্রাপ্ত এবং ৩০ জন নাবালক।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দী ও আটক ব্যক্তিরা স্থানীয় সময় দুপুর নাগাদ রামাল্লায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে ২০ জনকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বাইরে নির্বাসিত করা হবে চুক্তির অংশ হিসেবে।
এ ছাড়া, চুক্তির অধীনে আজ আরও পাঁচ থাই নাগরিক মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যদিও তাদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ শুরুর পর থেকে মোট সাতজন ইসরায়েলি নারী মুক্তি পেয়েছেন। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৯০ ফিলিস্তিনি বন্দী ও আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০ জানুয়ারি বিনিময় চুক্তির প্রথম দফার প্রথম দিনে হামাস তিন ইসরায়েলি নারী বন্দীকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে নারী ও শিশু মিলিয়ে ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়। একইভাবে, ২৫ জানুয়ারি বন্দী বিনিময়ের দ্বিতীয় দফায় ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পায়।