হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

সিনওয়ারকে সন্ত্রাসী বলে বিপদে সৌদি আরবের শক্তিশালী মিডিয়া গ্রুপ

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মিডিয়া গ্রুপ হিসেবে পরিচিত এমবিসি। এই গ্রুপেরই একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সদ্য প্রয়াত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে ‘সন্ত্রাসের মুখ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার জের ধরে আরবের বিভিন্ন দেশে তীব্র জনরোষের মুখে পড়েছে এমবিসি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশে জড়িত এমবিসি কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছে সৌদি আরবের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থা। 

রোববার ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, কথিত ওই টেলিভিশন চ্যানেলের নাম উল্লেখ না করে সৌদি আরবের জেনারেল অথোরিটি ফর মিডিয়া রেগুলেশন বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে—সৌদি মালিকানাধীন এমবিসির একটি প্রতিবেদন সমগ্র অঞ্চল জুড়ে ফিলিস্তিনিপন্থীদের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। ওই প্রতিবেদনটি ‘রাজ্যের নিয়ম এবং গণমাধ্যম নীতিকে লঙ্ঘন করেছে’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। 

লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত এমবিসি মিডিয়া গ্রুপের সবচেয়ে বড় অংশীদার এখন সৌদি সরকার। দেশটি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইছে। হামাস এবং হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে ঐতিহাসিক শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে ইসরায়েল। বর্তমানে ইসরায়েল ওই দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই ইরান এবং এর সমর্থিত হামাস এবং হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠীগুলোকে আরব অঞ্চলের জন্য ক্ষতিকারক শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। তবে গাজায় বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলের নৃশংসতার কারণে সমগ্র আরব অঞ্চলের মানুষদের ক্ষোভের বিষয়েও সচেতন সৌদি কর্তৃপক্ষ। চলমান যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে এমন আশঙ্কা করে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাঁরা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান পরিচালনার বারবার নিন্দা জানিয়েছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজায় হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই ঘটনার কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি সৌদি আরব। তবে সিনওয়ারের মৃত্যুর খবরটি ইসরায়েল নিশ্চিত করার পর এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এমবিসির একটি টেলিভিশন চ্যানেল। 

এমবিসির টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সেই প্রতিবেদনে জেরে বিক্ষোভ হয়েছে মিসরের বাগদাদেও। সেখানে অবস্থিত এমবিসির একটি আঞ্চলিক অফিসে হামলা চালিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। অনলাইনে প্রচারিত একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা শুক্রবার রাতে এমবিসির অফিসে কম্পিউটার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ভাঙতে ভাঙতে ইসরায়েল এবং সৌদি বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। 

মধ্যপ্রাচ্যের দেশে দেশে অফিস পরিচালনা করা এমবিসি মিডিয়া গ্রুপের ১৫ মিনিটের সেই প্রতিবেদনটিতে প্রয়াত সিনওয়ারকে একটি দীর্ঘ তালিকার সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। মূলত রাজনৈতিক ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের সন্ত্রাসী হিসেবেই চিহ্নিত করে সৌদি আরব। সিনওয়ার ছাড়াও এমবিসির প্রতিবেদনে নিহত ওসামা বিন লাদেন, ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি এবং হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। 

সৌদি আইন অনুযায়ী—চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করাও বেআইনি। তবে ইরান সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা প্রভাবিত ইরাকে সোলেইমানি এবং নাসরাল্লাহর মতো ব্যক্তি বিপুল শ্রদ্ধার পাত্র। 

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এমবিসি গ্রুপের বাজার মূলধন ৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এই গ্রুপের যে টেলিভিশনটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেটির কাছে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের অনুরোধ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। সামাজিক মাধ্যমের ফিড থেকে ইতিমধ্যেই তারা বিতর্কিত প্রতিবেদনটি মুছে দিয়েছে।

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা

গাজায় হামলা চালিয়ে হামাসের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা এবং এক দোভাষী নিহত

এবার ডিজেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করল ইরান, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রু আটক

ইরানে দুইবার সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে ওয়াশিংটন: মার্কিন দূত

জানুয়ারিতেই হতে পারে গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, সেনা প্রস্তুত করছে ইন্দোনেশিয়া

তীব্র শীতে গাজায় প্রাণ সংহারকারীর ভূমিকায় ‘বায়রন’, নিহত অন্তত ১৪

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

এবার গাজাবাসীর নতুন হুমকি ঘূর্ণিঝড় বায়রন, ঝুঁকিতে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ

ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের শর্তে গাজায় এক দশকের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসের