হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করল জর্ডান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার পর মুসলিম ব্রাদারহুডের সদর দপ্তরে অভিযান চালিয়েছে জর্ডানের পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

জর্ডান সরকার দেশটির ইসলামপন্থী গোষ্ঠী মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি রকেট ও ড্রোন হামলার ষড়যন্ত্র সন্দেহে এই গোষ্ঠীর কয়েক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল জর্ডানের নিরাপত্তা বাহিনী। এর এক সপ্তাহ পরেই দেশটির পক্ষ থেকে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজেন আল-ফারায়া এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, মুসলিম ব্রাদারহুডের সব কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে ও তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। এখন থেকে জর্ডানে এই গোষ্ঠীর সব ধরনের কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

যদিও এই ঘোষণার বিষয়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে গোষ্ঠীটি হামলার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল।

‘ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট’ বা আইএএফ জর্ডানের পার্লামেন্টের বৃহত্তম বিরোধী দল। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা আইএএফের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফারায়ার ঘোষণার পর তাদের সদর দপ্তরে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্টের মহাসচিব ওয়ায়েল সাক্কা জোর দিয়ে বলেছেন, এটি একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দল এবং অন্য কোনো সাংগঠনিক সংস্থার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় শৃঙ্খলা, আইন ও সংবিধান মেনে চলি।’

২০২০ সালে জর্ডানের শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিলেন, মুসলিম ব্রাদারহুড ‘বিলুপ্ত’ হয়ে গেছে, কারণ, তারা তাদের আইনি অবস্থান স্পষ্ট করেনি। তবে গোষ্ঠীটি তাদের রাজনৈতিক ও অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। এরপর গত বছরের সংসদীয় নির্বাচনে ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট অংশগ্রহণ করে ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৩১টিতে জয়লাভ করে।

গত সপ্তাহে জর্ডানের জেনারেল ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট জানায়, তারা ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দেশব্যাপী নাশকতার’ পরিকল্পনা করার সন্দেহ ছিল। ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্টর তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে বিস্ফোরক ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র রাখা, রকেট তৈরি, উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত একটি রকেট লুকিয়ে রাখা, ড্রোন তৈরির প্রকল্প এবং জর্ডান ও বিদেশে কিছু ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো বিষয়ও ছিল।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফারায়া অভিযোগ করেন, মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা ছায়ার আড়ালে কাজ করে এবং এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকে যা দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে। তিনি দাবি করেন, কর্তৃপক্ষ জর্ডানের শহরগুলোর মধ্যে বিস্ফোরক ও অস্ত্র পরিবহন এবং আবাসিক এলাকায় সেগুলো মজুত করার প্রমাণ পেয়েছে। এ ছাড়া গোপন রকেট তৈরির কারখানা এবং প্রশিক্ষণ ও সদস্য নিয়োগ কার্যক্রমের তথ্যও পাওয়া গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ফারায়া আরও অভিযোগ করেন, মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা তাঁদের কার্যক্রম ও সন্দেহজনক সংশ্লিষ্টতা লুকানোর জন্য সদর দপ্তর থেকে নথি অপসারণ করেন ও এসব ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফারায়ার সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে মুসলিম ব্রাদারহুড। তারা দাবি করেছে, মুসলিম ব্রাদারহুড ‘শান্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।

প্রসঙ্গত, প্রায় ১০০ বছর আগে মিসরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম ব্রাদারহুড। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর স্থানীয় শাখা রয়েছে। এই গোষ্ঠীর অন্যতম লক্ষ্য হলো, ইসলামিক আইন বা শরিয়া দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ছাড়াও বেশ কয়েকটি আরব দেশে সংগঠনটি নিষিদ্ধ। এসব দেশের সরকার মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে।

গাজায় হামাসবিরোধী ইসরায়েলি প্রক্সি গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত, কে তিনি

গাজায় যুদ্ধবিরতি খুব ভালোভাবে চলছে, দ্বিতীয় ধাপ শুরু শিগগির: ট্রাম্প

মার্কিন মধ্যস্থতায় ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় লেবানন-ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের নেলসন ম্যান্ডেলা: বারঘৌতির মুক্তির দাবিতে সোচ্চার দুই শতাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব

‘সর্বত্র ভূত দেখে’ যত্রতত্র ‘বোমা ফেলছেন বিবি’, লাগাম টানতে ব্যর্থ যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান—পোপ

দুর্নীতির মামলায় প্রেসিডেন্টের কাছে নেতানিয়াহুর ক্ষমা প্রার্থনা

গাজার পুলিশ বাহিনী গঠনে হাজারো ফিলিস্তিনিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মিসর

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে, নিহত ৭০ হাজার ছাড়াল

সংঘবদ্ধ নির্যাতন ‘কার্যত’ ইসরায়েলের রাষ্ট্রনীতি, কুকুর হামলা, যৌন নির্যাতনের চিত্র জাতিসংঘের প্রতিবেদনে