ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্য আবারও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে এ পর্যন্ত ছয়জন মারা গেছে এবং ১১ জন নিখোঁজ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ, টেহরি ও বাগেশ্বর জেলায়।
জানা গেছে, বাগেশ্বরের পাওসারি গ্রামে দুটি বাড়ি ভেঙে পড়ে বাসন্তী দেবী ও বাচুলি দেবী নামে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। একই পরিবারের আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। চামোলির মোপাতা গ্রামে ভূমিধসের কারণে তারা সিং (৬২) ও কমলা দেবী (৬০) নামে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একজন আহত এবং ২৫টি গবাদিপশু নিখোঁজ। রুদ্রপ্রয়াগের জখোলি এলাকায় সরিতা দেবী নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এই জেলায় তিনটি মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে এবং ৮ জন নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে—সাতে সিং নেগি, কুলদীপ সিং নেগি, নীরজ এবং রাজ। এ ছাড়া দেরাদুন শহরের বিনদাল নদীতে ১০ বছরের এক শিশু ভেসে গিয়েছিল, পরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পাহাড়ে ভূমিধসের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যার মধ্যে বদ্রিনাথ ও কেদারনাথ মহাসড়কও রয়েছে। এর ফলে অনেক তীর্থযাত্রী ও পর্যটক আটকা পড়েছিলেন। রাজ্যের এসডিআরএফ দল প্রায় ৭০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি প্রশাসনকে দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণকাজ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং ডিডিআরএফের মতো দলগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য বাগেশ্বর, চামোলি, দেরাদুন ও রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে, যা চরম সতর্কতার নির্দেশ করে। এ ছাড়া চম্পাওয়াত, হরিদ্বার, পিথোরাগড়, উধম সিং নগর এবং উত্তরকাশী জেলায় ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, পাহাড়ি নদীগুলো, যেমন বলগঙ্গা, ধর্মগঙ্গা এবং ভিলাঙ্গনা, বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এবারের বর্ষায় উত্তরাখণ্ডে ধারাবাহিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে। এর আগে ২৩ আগস্ট থারালি এবং ৫ আগস্ট উত্তরকাশীতে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।