ভারতের গুজরাট রাজ্যের মরবিতে ব্রিটিশ আমলের একটি কেবল সেতু ভেঙে ১৪১ জন নিহত হওয়ার একদিন পরে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সেতু সংস্কার প্রতিষ্ঠান ওরেভারের ব্যবস্থাপক, টিকিট সংগ্রহকারী, সেতু মেরামতের ঠিকাদার এবং ভিড় সামলানোর দায়িত্বে থাকা তিনজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি আজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মরবি পুলিশ প্রধান অশোক যাদব বলেছেন, ‘ওরেভার বিরুদ্ধে একাধিক নিরাপত্তাবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এর শীর্ষস্থানীয় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা দোষীদের পালিয়ে যেতে দেব না, কাউকে রেহাই দেব না।’
গত মার্চ মাসে ঔপনিবেশিক যুগের ঐতিহাসিক এ সেতুটি মেরামতের জন্য ওরেভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর সাত মাস পরে গত ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে সেতুটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেতু মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেতুটি ৮ থেকে ১২ মাস বন্ধ রাখতে চুক্তিবদ্ধ ছিল ওরেভা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই গত সপ্তাহে সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। পুলিশ এ ব্যাপারটিকে ‘গুরুতর দায়িত্বহীনতা ও অসতর্কতা’ উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছে। তবে মামলায় কারও নাম নেই।
মামলার নথিতে বলা হয়েছে, যারা সেতুটি মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, তারা কেউ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাঁরা সেতুটির ধারণক্ষমতা সম্পর্কে সঠিক পরীক্ষা চালাননি। তবে তারা সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সচেতন ছিল।
কর্মকর্তারা বলেছেন, সেতুটিতে মাত্র ১২৫ জনের ধারণক্ষমতা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার দিনে সেতুটির ওপরে প্রায় ৫০০ মানুষের ভিড় জমেছিল। সে জন্য সেতুর পুরোনো ধাতব তারগুলো ছিঁড়ে গেছে।
গত সপ্তাহে সেতুটি পুনরায় চালু করার সময় ওরেভার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়সুখভাই প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘তারা দুই কোটি টাকা ব্যয় করে সেতুটির শতভাগ সংস্কার সম্পন্ন করেছে।’ তিনি আরও দাবি করেছিলেন, সংস্কার করা সেতুটি কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ বছর টিকে থাকবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এক সপ্তাহও টিকেনি।