মুম্বাইয়ের কুখ্যাত মাফিয়া দাউদ ইব্রাহিম এক পাঠান মেয়েকে বিয়ে করে পাকিস্তানের করাচিতে বসবাস করছেন। এমন দাবি করেছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। দাউদ ইব্রাহিমের ভাতিজা আলি শাহ ইব্রাহিম পারকারের বরাত দিয়ে এ দাবি করেছে তদন্ত সংস্থাটি।
এনআইএ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নতুন বিয়ে করলেও দাউদ ইব্রাহিম আগের স্ত্রী মেহজাবিন আলি শাহ পারকারকে তালাক দেননি। মেহজাবিন এ বিয়ের কথা জানেন এবং তিনি স্বামী ও তাঁর নতুন স্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন। প্রথম স্ত্রীর ওপর থেকে তদন্ত সংস্থাগুলোর নজর সরাতেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকতে পারেন বলে জানান আলি শাহ ইব্রাহিম।
আলি শাহ দাবি করেন, ভারতে দাউদের পরিবারের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেছেন মেহজাবিন। মেহজাবিনই তাঁকে একটি পাঠান পরিবারের মেয়েকে দাউদের দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা জানিয়েছেন। ২০২২ সালের জুলাইয়ে দুবাইয়ে সাক্ষাৎকালে মেহজাবিন দাউদের দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য তাঁকে জানান।
আলি শাহ ইব্রাহিম এনআইএকে আরও জানান, দাউদ ইব্রাহিম ওই পাঠান মেয়েকে বিয়ে করে বর্তমানে করাচির প্রতিরক্ষা স্থাপনা এলাকায় বসবাস করছেন। তাঁর বাসভবন আবদুল্লাহ গাজী বাবার দরগার পেছনে রহিম ফাকি এলাকার কাছে অবস্থিত। এ ছাড়া দাউদ ইব্রাহিম লোকজনকে বিভ্রান্ত করতে খবর রটিয়েছিলেন, তিনি আগের স্ত্রী মেহজাবিনকে তালাক দিয়েছেন। এটি সত্য নয়।
তবে এর কিছুদিন আগেই আলি শাহ ইব্রাহিম জানিয়েছিলেন, দাউদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই।
ভারতে দাউদ ইব্রাহিম, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছোটা শাকিল এবং তথাকথিত ডি কোম্পানির আরও তিন সদস্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের পর এনআইএ এমন দাবি করল।
দাউদ ইব্রাহিমের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটের নাম ‘ডি কোম্পানি’। ওই চার আসামির বিরুদ্ধে ভারতের মুম্বাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য তহবিল সংগ্রহের অভিযোগ এনেছে এনআইএ।
দাউদ ইব্রাহিম ভারত ছাড়ার পর তাঁর গ্যাং পরিচালনা করতেন ছোটা শাকিল, আনিস ইব্রাহিম শেখ, জাভেদ চিকনা, টাইগার মেমন এবং হাসিনা পারকার।
এদিকে ২০০৩ সালে ভারতের কুখ্যাত সব সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল। সেই তালিকায় দাউদ ইব্রাহিমের নামও ছিল। গত বছরের আগস্টে দাউদ ইব্রাহিমকে আটকে ২৫ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে এনআইএ।
গত সপ্তাহে দাউদ ও তাঁর ভাই আনিসের হয়ে কাজ করার দায়ে গোয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন ‘গুটখা’–এর নেতা জেএম জোশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন মুম্বাইয়ের বিশেষ আদালত। তিনি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং দাউদ ও তাঁর ভাই আনিসকে পাকিস্তানে তামাকজাত বিশেষ মাদকের কারখানা স্থাপনে সহায়তা করেছিলেন।