ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও তাঁর ভারত সফর স্থগিত করেছেন। চলতি মাসে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনার পর নিরাপত্তার আশঙ্কায় তাঁর এই সফর বাতিল করা হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।
চলতি বছরের শেষ দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের জন্য নেতানিয়াহুর দিল্লি আসার কথা ছিল। দুই সপ্তাহ আগে নয়াদিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তার আশঙ্কার কারণে সফরটি পিছিয়ে গেছে। এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে ভারতীয় রাজধানীতে এটিই ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলা। এই হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম আই ২৪ নিউজ জানিয়েছে, ‘নেতানিয়াহু সর্বশেষ ২০১৮ সালে ভারতে এসেছিলেন এবং এবার মোদির সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তিনি এখন নিরাপত্তা মূল্যায়ন শেষ হওয়ায় আগামী বছর কোনো এক সময়ে নতুন তারিখ খুঁজবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
এর আগে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে বছরের শেষ দিকে ভারত সফরের পরিকল্পনা করছিলেন নেতানিয়াহু। চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বার ভারত সফর বাতিল করলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর এক দিনের ভারত সফর হঠাৎ বাতিল করেন তিনি। ১৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলে অভূতপূর্বভাবে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় সময়সূচির জটিলতাকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন। এপ্রিলের নির্বাচনের আগেও তিনি একইভাবে সফর বাতিল করেছিলেন।
ভারতে নেতানিয়াহুর এই সফরকে ইসরায়েলে দেখা হচ্ছিল তাঁর বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে। জুলাই মাসে তাঁর রাজনৈতিক দল এমনকি ব্যানারও ঝুলিয়েছিল। যেখানে মোদির সঙ্গে তাঁর ছবি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর ছবি ব্যবহার করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এক ভিন্ন উচ্চতার নেতা হিসেবে তুলে ধরা।
তাঁর নির্বাচনী প্রচারেও জোর দেওয়া হয়েছে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তুলে এনে তাঁকে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য এক অনন্য নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টায়।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নেতানিয়াহু ভারত সফর করেছিলেন। তার আগে ২০১৭ সালে মোদি তেল আবিব সফর করেন এবং তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইহুদি রাষ্ট্রটিতে সরকারি সফরে যান। ভারত ও ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমে দুই নেতার ব্যক্তিগত সখ্য নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হয়।