উত্তর প্রদেশের সীতাপুরে সরকারি শিক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তাকে (প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা বিএসএ) বেল্ট খুলে পিটিয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একজন নারী শিক্ষকের করা অভিযোগের ব্যাখ্যা চাওয়ার পর শিক্ষা দপ্তরের অফিসে এ বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, ওই প্রধান শিক্ষক বেল্ট দিয়ে বিএসএ অখিলেশ প্রতাপ সিংহকে পেটান, তাঁর ফোন ভাঙচুর করেন এবং সরকারি নথি ছিঁড়ে ফেলেন। ঘটনাটির ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম ব্রিজেন্দ্র কুমার বর্মা। তিনি নাদওয়া বিশেশ্বরগঞ্জের মাহমুদাবাদ ব্লকের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। গত মঙ্গলবার একটি অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিএসএ কার্যালয়ে যান তিনি। এক নারী শিক্ষকের করা অভিযোগ নিয়ে তাঁকে তলব করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্রিজেন্দ্র কুমার বর্মার ব্যাখ্যায় অসন্তুষ্ট হন বিএসএ সিংহ। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়।
হঠাৎই বর্মা ডেস্কে ফাইল ছুড়ে মারেন এবং কোমর থেকে বেল্ট খুলে শিক্ষা কর্মকর্তা অখিলেশ প্রতাপ সিংহকে আঘাত করতে শুরু করেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, মাত্র ছয় সেকেন্ডে বিএসএকে পাঁচবার আঘাত করেছেন ওই শিক্ষক। পুলিশে ফোন করতে গেলে বিএসএ সিংহের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন বর্মা। এরপর তিনি সরকারি কিছু নথি ছিঁড়ে ফেলেন এবং বাধা দিতে গেলে অফিসের ক্লার্ক প্রেম শঙ্কর মউরিয়ার সঙ্গেও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
অফিসের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কর্মচারীরা ছুটে এসে বিএসএ অখিলেশ প্রতাপ সিংহকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। মুহূর্তেই অফিসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে বর্মাকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় থানার ইনচার্জ অনুপ শুক্লা জানিয়েছেন, ঘটনায় ব্যবহৃত বেল্ট, ভাঙা ফোন ও ছেঁড়া নথি জব্দ করা হয়েছে। বিএসএর অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অখিলেশ প্রতাপ সিংহের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগে তিনি এটিকে তাঁর ওপর ‘পূর্বপরিকল্পিত হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং নিরাপত্তাজনিত হুমকির কথা তুলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন।
অন্যদিকে পুলিশ হেফাজতে ব্রিজেন্দ্র বর্মা দাবি করেছেন, বিএসএ তাঁকে হয়রানি করছিলেন এবং এক নারী শিক্ষকের সঙ্গে বিরোধের কারণে চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আজ ব্যাখ্যার সময় তর্ক বাড়তে থাকে এবং উভয় পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। সবার বয়ান ও মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।