ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এর মধ্যেই আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের একাধিক এলাকায় পাকিস্তান থেকে আসা ড্রোনের ঝাঁক শনাক্ত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনা সূত্র জানিয়েছে, এসব ড্রোনকে প্রতিহত করা হয়েছে এবং এখনো কিছু এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জম্মু ও সাম্বা (জম্মু-কাশ্মীরে), পাঠানকোট ও ফিরোজপুর (পাঞ্জাবে) এবং জয়সালমে (রাজস্থানে) ড্রোন প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া বারমের ও পোখরানেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
সেনাবাহিনী জানায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ভারতের পশ্চিম সীমান্তে। তবে ভারতের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে এস-৪০০ সিস্টেম এসব হামলা রুখে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৭ ও ৮ মে রাতের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের আকাশসীমা একাধিকবার লঙ্ঘন করেছে। ৩৬টি স্থানে ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালানো হয়েছে। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালানো হয়েছে।
সরকার আরও জানায়, এত বিপুলসংখ্যক ড্রোন ব্যবহার করে মূলত ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে পরীক্ষা করার চেষ্টা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের। ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষ ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা গেছে, সেগুলো তুরস্কের ‘অ্যাসিসগার্ড সোনগার’ মডেলের ড্রোন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সংঘটিত হামলার জেরে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করে ভারত। পেহেলগামের ওই হামলায় ২৬ জন পর্যটক প্রাণ হারান। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্কীকার করেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার রাতে আবার বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে জম্মু শহর। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো শহর। শহরের আকাশে সাইরেন বাজতে থাকে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জনমনে।
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘এখনো ভারী অস্ত্রের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।’ তিনি একটি অন্ধকার ছবিও পোস্ট করেন এমন ক্যাপশন দিয়ে—‘এখন জম্মুতে ব্ল্যাকআউট চলছে। শহরজুড়ে সাইরেন বাজছে।’
ওমর আবদুল্লাহ সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ‘জম্মু ও আশপাশের বাসিন্দাদের কাছে আমার অনুরোধ, রাস্তায় বের হবেন না, ঘরে থাকুন বা আশ্রয় নেওয়ার মতো কাছাকাছি কোনো নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন। গুজব এড়িয়ে চলুন, যাচাই না করে কিছু ছড়াবেন না। আমরা একসঙ্গে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করব।’