দুর্গাপূজার মণ্ডপে দেবী দুর্গার পায়ের কাছে রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি! দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত এমন নির্দেশনাই দিয়েছেন। রাজধানীর কয়েক শ পূজা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন বলে জানা গেছে। তারপরই এ নিয়ে শুরু হয়ে গেছে তোলপাড়।
বৈঠকে উপস্থিত বেশ কয়েকজন জানান, আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে বিষয়টি না থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ তা উত্থাপন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি, সামনেই প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্মদিন। তাই দেবীর আশীর্বাদ পাওয়ার উপযুক্ত স্থানে তাঁর ছবি রাখতে হবে। তাহলে দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের জন্য দুর্গার আশীর্বাদ পাবেন প্রধানমন্ত্রী।
দিল্লির সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটিগুলোর সঙ্গে গত শনিবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসেছিলেন রেখা। উদ্যোক্তাদের আশ্বাস দেন, তাঁর সরকারের তরফে সব রকম সাহায্য করা হবে। ১২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের মাশুলে ছাড়ের ঘোষণা করেন তিনি। জানান, পূজায় অস্থায়ী মিটারের জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার যে টাকা নিত, তার মাত্র ২৫ শতাংশ নেবে তাঁর সরকার।
সূত্রের দাবি, এর পরেই উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে রেখা বলেন, ‘আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। আমরা চাই, মা দুর্গার আশীর্বাদ তাঁর সঙ্গে থাকুক। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর গোটা দেশ সেবামূলক কাজ করবে। আমি চাই, সারা দেশের সঙ্গে আপনারাও এতে শামিল হোন। প্রতিটি মণ্ডপে মা দুর্গার পায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি রাখুন। তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের জন্য মা দুর্গার আশীর্বাদ পাইয়ে দিন।’
বিদ্যুতের বিল ছাড় ও অনুমোদনের পাশাপাশি এ প্রস্তাবকে কার্যত শর্তসাপেক্ষ ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন অনেকে।
এই নির্দেশ আসার পর শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক। সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘পূজার মণ্ডপকে রাজনৈতিক প্রদর্শনী বানাতে চাচ্ছে বিজেপি। অদ্ভুত দাবি!’
ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কয়েকটি পূজা কমিটিও। যদিও এ নিয়ে বিজেপির কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।