আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কির ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কমিটি। এর ফলে আগামী ৯ থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে তাঁর ভারত সফরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এই সফর যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে ২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর এটাই হবে এই গোষ্ঠীর কোনো শীর্ষ নেতার প্রথম ভারত সফর।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে তালেবান বাহিনী দেশটির ক্ষমতায় থাকাকালে সেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি জাতিসংঘের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। এর মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দের বিধানও রয়েছে। তবে কূটনৈতিক উদ্দেশ্যে মাঝে মাঝে এই নিষেধাজ্ঞায় সাময়িক ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে।
শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, নয়াদিল্লি ইতিমধ্যেই আফগান প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ভারত মানবিক সহায়তাও পাঠিয়েছে। তবে তিনি সরাসরি মুতাক্কির সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
এদিকে তালেবান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র জিয়া আহমদ তাকাল জানান, সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা, বাণিজ্যিক বিনিময়, শুকনো ফল রপ্তানি, স্বাস্থ্য খাতে সুযোগ-সুবিধা, কনস্যুলার সেবা ও বিভিন্ন বন্দর ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে তিনি সফরের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি।
ভারতীয় ও আফগান গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি আসার আগে মুতাক্কি রাশিয়া সফরে যাবেন। সেখানে তিনি রাশিয়া, চীন, ইরান, পাকিস্তান, ভারত ও মধ্য এশীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন।
আফগান রাজনৈতিক বিশ্লেষক হেকমতুল্লাহ হেকমত বলেন, ‘তালেবান সরকারের জন্য এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আফগানিস্তান বর্তমানে আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য মরিয়া। স্বীকৃতি অর্জনের ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।’
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত শুধু রাশিয়াই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারত ২০২১ সালে কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করলেও, এক বছর পর মানবিক সহায়তা সমন্বয়ের জন্য একটি টেকনিক্যাল মিশন চালু করে।