ভারতের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী রাহুল গান্ধীকে বাদ দিয়েই হিমাচল ও গুজরাটের বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে দলটি। রাহুল বর্তমানে ব্যস্ত ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায়।
আগামী ১২ নভেম্বর হিমাচল বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সেখানে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচারের মূল দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে চূড়ান্ত ব্যর্থ হলেও প্রিয়াঙ্কা হিমাচলে সফল হবেন বলেই মনে করছেন কংগ্রেসের নেতারা। এমনকি দলের বিরুদ্ধ মতাবলম্বী গ্রুপ বলে পরিচিত জি-২৩-এর নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মাও আশা প্রকাশ করেছেন, হিমাচলে কংগ্রেস ভালো ফল করবে।
হিমাচলে ভালো করার আশাবাদ থাকলেও গুজরাটে দলের ভাঙন আর আম আদমি পর্টির উত্থানে কংগ্রেস খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের হেভিওয়েট নেতা ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে অবশ্য বিধানসভা নির্বাচনের বদলে রাহুলকে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তুলে ধরতেই ব্যস্ত।
হিমাচল প্রদেশের বিধানসভার ভোটের আগে রাজ্যের ২৬ জন প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তার পরও কংগ্রেস প্রচারে খামতি রাখছে না। রাহুলের অনুপস্থিতিতে প্রিয়াঙ্কাই তুলে নিয়েছেন প্রচারের দায়িত্ব। তবে ভোট প্রচারে তাঁকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মন্ত্রী আনন্দ শর্মা। তবু কংগ্রেস ভালো ফল করবে বলে তিনি আশাবাদী।
গুজরাটে প্রথম দফায় ১ ডিসেম্বর ৮৯ আসনে ভোট হবে। পরে ৫ ডিসেম্বর ভোট হবে বাকি ৯৩ আসনে। দুই রাজ্যের সব আসনেই ভোট গণনা ৮ ডিসেম্বর। হিমাচলে কংগ্রেস কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও গুজরাটে দলের ভাঙনে বিধ্বস্ত কংগ্রেসের ৩০ বছর পর সরকার গড়ার স্বপ্ন। প্রায় প্রতিদিনই দল ভাঙছে। এ ছাড়া আম আদমি পার্টির উত্থানও কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলছে।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলটের মতে, হিমাচলে দল জিতলেও গুজরাটে আম আদমি পার্টি বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে রাহুলকে বিরোধীদের সম্মিলিত প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। বিজেপির সাবেক সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দাবি, দুই রাজ্যেই আরও বেশি আসন নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরছে। গুজরাট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দাবি, তাঁর হাত ধরেই উন্নত হয়েছে গুজরাট।
কংগ্রেস অবশ্য বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে বৃদ্ধভাতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা করছে। ৮ ডিসেম্বর ভোট গণনার দিনই বোঝা যাবে তাদের কৌশল আদৌ কাজ করেছে কি না। তবে কংগ্রেসের একঝাঁক উঠতি নেতা কিন্তু দুই রাজ্যেই চেষ্টা করছেন ক্ষমতায় ফেরার। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে এ দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা তাকিয়ে আছেন গুজরাট ও হিমাচলের দিকে।