ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণ সাগর হয়ে বিশ্বের সঙ্গে শস্য রপ্তানি চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে রাজি হয়েছে রাশিয়া। তবে জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তিটি নতুন করে শুরু করতে সাতটি শর্ত দিয়েছে মস্কো। শুক্রবার জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়া স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বিষয়টি জানিয়েছেন।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া কেবল তাদের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ইউক্রেনের জন্য স্বাক্ষরিত শস্য চুক্তিতে যোগ দিতে পারে। তবে তার জন্য ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের রাশিয়ার দীর্ঘদিনের দাবিকে পূরণ করতে হবে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময় রাশিয়ার প্রতিনিধি বলেন, ‘রাশিয়া বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহের জন্য শস্য চুক্তির গুরুত্ব স্বীকার করে এবং এতে ফিরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতেও প্রস্তুত। কিন্তু কেবল যদি এই চুক্তিতে রাশিয়ার অংশগ্রহণের পূর্বে মস্কো যেসব শর্ত আরোপ করেছিল তা সম্পূর্ণরূপে আমলে নেওয়া হয় এবং কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই বাস্তবায়িত হয়।’
রাশিয়ার শর্তের কথা বলতে গিয়ে পলিয়ানস্কি বলেন, ‘বিশ্ব বাজারে রাশিয়ার শস্য এবং সার রপ্তানির ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞার আরোপ করা হয়েছে তা দূর করতে হবে এবং যেকোনো খাতে জড়িত রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর থেকে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাও অবশ্যই দূর করতে হবে। একই সঙ্গে SWIFT পেমেন্ট সিস্টেমে রাশিয়াকে আবারও যুক্ত করতে হবে।’
পলিয়ানস্কি আরও বলেন, ‘রাশিয়ার কৃষি যন্ত্রপাতির খুচরা যন্ত্রাংশ এবং এর কাঁচামালের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এবং রাশিয়ার খাদ্য রপ্তানির বিমা সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যাও সমাধান করা উচিত।’
আরও একটি শর্তের কথা ব্যক্ত করে পলিয়ানস্কি বলেন, ‘গত মাসে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তগলিয়াত্তি-ওদেসা অ্যামোনিয়া পাইপলাইন পুনরুদ্ধারসহ সার উপকরণ রপ্তানিতে রাশিয়ার ওপর কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।’ উল্লেখ্য, মস্কো এবং কিয়েভ উভয়ই তগলিয়াত্তি-ওদেসা পাইপলাইনের দুর্ঘটনা কে জড়িত তা নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পলিয়ানস্কি বলেন, রাশিয়ার কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট যেসব সম্পদ রাশিয়ার বাইরে বিভিন্ন দেশে জব্দ রয়েছে তা অবমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সর্বশেষ শর্ত হিসেবে পলিয়ানস্কি বলেন, এই শস্য চুক্তিকে অবশ্যই মানবিক চরিত্র অর্জন করতে হবে।