হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

২৯ জুন এলেই ওয়াইনে ভেসে যায় স্পেনের এক শহর, কিন্তু কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

হারো শহরে এভাবেই উদ্‌যাপিত হয় ‘লা বাতেল্লা দেল ভিনো’। ছবি: সিএনএন

স্পেনের উত্তরে লা রিওহা অঞ্চলের শান্ত শহর হারো। প্রতিবছরের ২৯ জুন এখানেই উদ্‌যাপিত হয় এক ব্যতিক্রমী উৎসব ‘লা বাতেল্লা দেল ভিনো’। বাংলায় এর অর্থ দাঁড়ায়—মদের যুদ্ধ। তবে নামে যুদ্ধ হলেও এটি আসলে এক উৎসব। এটা অনেকটা আমাদের দেশের সাংগ্রাইন উৎসবে রাখাইন সম্প্রদায়ের জলকেলির মতো। বিশেষ দিনটিতে হাজার হাজার লিটার লাল ওয়াইন ছিটিয়ে একে অপরকে ভিজিয়ে ‘লা বাতেল্লা দেল ভিনো’ উৎসব উদ্‌যাপন করেন হারো শহরের মানুষ।

লা রিওহা অঞ্চলের এই বিখ্যাত উৎসবের শিকড় তাঁদের ইতিহাস, ধর্ম ও লোককথায় গভীরভাবে প্রোথিত। ষষ্ঠ শতাব্দীতে হারোর পৃষ্ঠপোষক সন্ত সান ফেলিসের সমাধিতে এক তীর্থযাত্রা দিয়ে এই উৎসবের সূচনা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। সেই তীর্থযাত্রাই পরে রূপ নেয় আনন্দঘন উৎসবে। শুরু হয় ‘ওয়াইন ব্যাপ্টিজম’ বা মদের ছোঁয়ায় আশীর্বাদ।

আরেকটি কাহিনি বলছে, এই উৎসবের সূচনা হয়েছিল দ্বাদশ শতাব্দীতে। আর এটা হয়েছিল হারো ও পার্শ্ববর্তী শহর মিরান্দা দে এব্রোর মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ থেকে। দুই শহরের বাসিন্দারা একসময় সীমারেখা চিহ্নিত করতে গিয়ে একে অপরের দিকে মদ ছুড়তে শুরু করেছিলেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলা সেই প্রথাই আজকের ‘মদের যুদ্ধে’ রূপ নিয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, প্রতিবছরের ২৯ জুন এই উৎসব শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। হারোর মেয়র ও সান ফেলিস ভ্রাতৃসংঘের সদস্যরা শহরবাসীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেন বিলিবিও পর্বতের ওপরে অবস্থিত সান ফেলিসের গির্জার দিকে। সেখানে একটি ধর্মীয় পূজার পর আকাশে রকেট ছুড়ে দিয়ে উৎসবের সূচনা ঘোষণা করা হয়।

ছবি: এএফপি

নিয়ম অনুযায়ী, সবাই সাদা পোশাক ও লাল স্কার্ফ পরে উৎসবে অংশ নেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সাদা পোশাক পরিণত হয় বেগুনি রঙে। ৫০ হাজার লিটার পর্যন্ত ওয়াইন কিংবা লাল মদ ব্যবহার হয় দিনটিতে। শহর কর্তৃপক্ষই এটি সরবরাহ করে। মূলত মদ তৈরির সময় উপজাত হিসেবে নিম্নমানের যে অতিরিক্ত মদ তৈরি হয়, তা দিয়েই এই চাহিদা পূরণ করা হয়।

অনেকে বলছেন, এই উৎসব শুধু মদের উৎসব নয়; এটি স্পেনের সংস্কৃতি, আনন্দ ও সামাজিক সংহতির প্রতীক। মদ ছিটিয়ে হারোর কেন্দ্রস্থলে ফিরে আসার পর সবাই ব্যান্ড বাজনার তালে শোভাযাত্রায় বের হন। এরপর অংশ নেন গরুর লড়াই ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে। দিনের একপর্যায়ে জনপ্রিয় স্থানীয় খাবার ‘কারাকোলেস’ বা টমেটো ও মরিচ দিয়ে রান্না করা শামুকও পরিবেশন করা হয়।

সম্প্রতি এই উৎসব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী দম্পতি জেসিকা ও এরিক স্মিথ জানান, উৎসবটি মাত্র তিন ঘণ্টার হলেও অভিজ্ঞতা অনন্য।

এই আনন্দঘন উন্মাদনার মাঝেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মনে করিয়ে দেয়, এটি যেন শুধুই মদের পার্টিতে পরিণত না হয়। লা রিওহার সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী হোসে লুইস পেরেজ পাস্তোর বলেন, ‘এই উৎসব শুরু হয়েছিল বিশ্বাস, ঐক্য ও বন্ধুত্ব দিয়ে। এটি শুধু মদ খাওয়ার বিষয় নয়, বরং শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি সুযোগ।’

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনা: শিখ ও হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতি

২০২৫ সালের সেরা সিইও কে

এবার ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠক—কী আছে সর্বশেষ ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবে

৪০ শতাংশ জার্মান মনে করেন মার্জের সরকার টিকবে না

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

এক বছরে ইউক্রেনের ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখলের দাবি রাশিয়ার

রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্রিপ্টোমাইনিংয়ে কাজে লাগাতে চান ট্রাম্প: পুতিন

ক্রিসমাসের প্রার্থনায় পুতিনের মৃত্যু চাইলেন জেলেনস্কি

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত জেলেনস্কির