হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

দেশে দেশে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’ নিয়ে আইন ও বিতর্ক

স্বেচ্ছামৃত্যুর সমর্থনে লন্ডনে একদল অধিকারকর্মী। ছবি: এএফপি

অন্তিম পরিস্থিতিতে প্রাপ্তবয়স্ক রোগীরা মৃত্যুর জন্য সহযোগিতা চাইতে পারবেন কি-না, এমন একটি আইন প্রস্তাবে ভোট দেবেন যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের এমপিরা। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, বেশির ভাগ দেশেই বর্তমানে স্বেচ্ছামৃত্যু অবৈধ। তবে পৃথিবীতে অন্তত ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ এমন দেশে বসবাস করছেন, যেখানে এ ধরনের মৃত্যুর বৈধতা রয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্পেন এবং অস্ট্রিয়া সহ বিভিন্ন দেশে স্বেচ্ছামৃত্যু বা সহায়তামূলক মৃত্যুর আইন পাস হয়েছে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি অন্তিম শয্যায় থাকা রোগীদের জন্যই শুধু নয়, যথাযথ কারণ দেখিয়ে কোনো সুস্থ সবল মানুষও এ ধরনের মৃত্যুর আবেদন করতে পারবে।

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রস্তাবিত আইনটি এ ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তার প্রস্তাব দিয়েছে। আইনটি পাস হলেও স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য রোগীদের উচ্চ আদালতের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। তবে সমালোচকেরা মনে করেন, যুক্তরাজ্যে এই আইনটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে দুর্বলদের জন্য এটি হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেরও ১০টি অঙ্গরাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা রয়েছে। ১৯৯৭ সালে দেশটির ওরেগন রাজ্যে প্রথমবারের মতো এই মৃত্যুর আইন চালু হয়। সেখানেও শুধুমাত্র অন্তিম শয্যায় থাকা রোগীদেরকে চিকিৎসকের অনুমোদিত ওষুধ ব্যবহার করে এই মৃত্যুর অধিকার দেওয়া হয়েছিল। তবে ওরেগনের গত ২৫ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে—অনেক রোগীই স্বাধীনতা হারানো, মর্যাদাহানির ভয় এবং পারিবারিক বোঝা হওয়ার শঙ্কায় এই পদ্ধতির জন্য আবেদন করেন।

কানাডায় প্রাথমিকভাবে অন্তিম শয্যায় থাকা রোগীদের কথা বিবেচনা করে ২০১৬ সালে স্বেচ্ছামৃত্যু চালু হয়েছিল। তবে ২০২১ সালে দেশটিতে এই আইনের আরও সম্প্রসারণ করা হয়। নতুন আইনে এমন ব্যক্তিদেরও স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার দেওয়া হয়, যারা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ কিংবা কোনো প্রতিবন্ধকতার কারণে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছেন।

কানাডার আইনটির সম্প্রসারণ দুর্বল এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন সমালোচকেরা। বর্তমানে দেশটিতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু ঘটে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

স্বেচ্ছামৃত্যুর আইন প্রণয়নে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ইউরোপের দেশগুলো। এই মহাদেশের সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, স্পেন এবং অস্ট্রিয়ায় স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা রয়েছে। সুইজারল্যান্ডে এটি বৈধ করা হয়েছিল ১৯৪২ সালে। এই দেশটিতে বিদেশিরাও স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য সহায়তা পেতে পারেন।

নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামে এটি বৈধ করা হয়েছে অন্তত ২০ বছর আগে। এই দুটি দেশে অন্তিম শয্যায় থাকা রোগীদের পাশাপাশি মানসিক রোগীরাও স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য সহযোগিতা চাইতে পারেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডেও স্বেচ্ছামৃত্যু বৈধ হয়েছে।

এই ধরনের মৃত্যুর সমর্থকেরা মনে করেন, কঠোর নিয়মাবলির মাধ্যমে এটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে। তবে সমালোচকদের মতে, আইনের প্রসার দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং ইউরোপের অভিজ্ঞতা ইঙ্গিত দেয়—স্বেচ্ছামৃত্যুর আইন সমাজে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আইনের বৈধতা ও প্রসার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, বর্তমানে আরও অনেক দেশেই নৈতিক, সামাজিক ও আইনগত বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ে সমাধানের পথ খুঁজছে।

পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার অভিযোগ—‘মিথ্যা’ বলছে ইউক্রেন

রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক যুদ্ধবন্দীকে হত্যার অভিযোগ ইউক্রেনীয় কমান্ডারের

জেলেনস্কি চাইলেন ৫০, যুক্তরাষ্ট্র দিতে চায় ১৫ বছরের নিরাপত্তা গ্যারান্টি

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত দিলেন ৪০ যুদ্ধ কভার করা বিবিসি সাংবাদিক

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতি হলেও দনবাস ইস্যু এখনো অমীমাংসিত

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনা: শিখ ও হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতি

২০২৫ সালের সেরা সিইও কে

এবার ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠক—কী আছে সর্বশেষ ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবে

৪০ শতাংশ জার্মান মনে করেন মার্জের সরকার টিকবে না

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা