রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও এর পাইলটকে হারিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির বিমানবাহিনীর বরাতে আজ রোববার এই খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা।
টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গতকাল শনিবার রাতে রুশ হামলার সময় যুদ্ধবিমানটি শত্রুর সাতটি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে। এরপরই বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উচ্চতা হারায় এবং ভেঙে পড়ে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই রাতে শত্রুর বিশাল আকাশ হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে প্রথম শ্রেণির পাইলট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম্যাক্সিম উস্তিমেঙ্কো (জন্ম ১৯৯৩) এফ-১৬ বিমানসহ প্রাণ হারিয়েছেন।
একটি পৃথক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী জানায়, সর্বশেষ হামলায় রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মোট ৫৩৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। এসবের মধ্যে ছিল শাহেদ ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও। তবে ইউক্রেন ৪৭৫টি লক্ষ্যবস্তু প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।
কিয়েভ ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ ও হামলার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ইউক্রেনের মাইকোলাইভ, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জাপোরিঝিয়া ও পশ্চিমাঞ্চলের লভিভ।
ইউক্রেনের চেরকাসি অঞ্চলের গভর্নর ইহোর তাবুরেতস জানান, তাঁর অঞ্চলে রুশ হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে এবং বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, তিনটি বহুতল ভবন ও একটি কলেজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, দক্ষিণ ইউক্রেনের মাইকোলাইভ ও কেন্দ্রীয় দ্নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের শিল্প স্থাপনাগুলোও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ধোঁয়াচ্ছন্ন ভবন ও ভাঙা জানালার ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিগুলোতে দেখা যায়, উদ্ধারকারীরা বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা কুরস্ক ও রোস্তভ সীমান্ত অঞ্চল ও দখল করা ক্রিমিয়া উপদ্বীপে ইউক্রেনের তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে।
এমন যুদ্ধপরিস্থিতির মধ্যেই গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর দেশের সামরিক ব্যয় হ্রাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং ইউক্রেনের সঙ্গে নতুন শান্তি আলোচনার সম্ভাবনার কথাও জানান।
গত কয়েক মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে দুবার শান্তি আলোচনায় মিলিত হন। তবে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি তাঁরা।