স্কটল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন হামজা ইউসুফ। এডিনবার্গের কোর্ট অফ সেশনে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এরই মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ ঘোষণা করেছেন হামজা ইউসুফ। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন শোনা রবিনসন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন মাইকেল ম্যাথিসন। জেনি গিলরুথকে দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব। এছাড়া নিল গ্রে, মাইরি ম্যাকঅ্যালান, মাইরি গোগেন, অ্যাঞ্জেলা কনস্ট্যান্স, অ্যাঙ্গাস রবার্টসন ও শার্লি-অ্যান সোমারভিলকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালে স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্টে প্রথম মুসলিম নেতা হন হামজা ইউসুফ। হামজা স্কটল্যান্ডে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। হামজা বলেন, ‘এখানে নেতৃত্ব দিতে গায়ের রং, ধর্ম-বর্ণ এসব কোনো বাধাই না। দেশের প্রতি আপনার বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকলেই আপনি একজন আদর্শ নেতা হতে পারবেন।’
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে জন্ম নেন হামজা ইউসুফ। পড়ালেখা করেছেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক পর্যায়ে তাঁর পড়ার বিষয় ছিল রাজনীতি। ২০১১ সালে স্কটল্যান্ড পার্লামেন্টের সদস্য (এমএসপি) নির্বাচিত হন তিনি। সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি ইংরেজি ও উর্দুতে শপথ নেন। এর আগে তিনি একজন এমএসপির সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন।
হামজা ইউসুফের বাবা পাকিস্তানের নাগরিক। অন্যদিকে তাঁর মায়ের জন্ম কেনিয়ার পাঞ্জাবি বংশোদ্ভূত একটি পরিবারে। দুজনই ১৯৬০ সালে ব্রিটেনে পাড়ি জমান।
২০১২ সালে স্কটিশ সরকারের একজন জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন হামজা ইউসুফ। সেই সময়ে স্কটল্যান্ডে নিযুক্ত হওয়া সর্বকনিষ্ঠ এবং প্রথম মুসলিম মন্ত্রী তিনি। এরপর ২০১৮ সালে বিচারবিষয়ক সচিব (সেক্রেটারি ফর জাস্টিস) হয়ে মন্ত্রিসভায় যোগ দেন এবং ২০২১ সালের মে মাসে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদে নিযুক্ত হন।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদে যোগ দেওয়ার পর বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন হামজা ইউসুফ। গত মাসে অডিট স্কটল্যান্ড জানায়, এ সময়ের মধ্যে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা খাত অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে কতটুকু অগ্রগতি হচ্ছে বা হচ্ছে না, সে সম্পর্কে স্কটিশ সরকারকে আরও স্বচ্ছ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, সামান্য ব্যবধানে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) দলীয় প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন হামজা ইউসুফ। তিনি ৫২ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেট ফরবিস পান ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।